E-Paper

জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য ক্যানিং হাসপাতালে

প্রাথমিকভাবে জরায়ু ফেটে গিয়ে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে আশঙ্কা করেন চিকিৎসকেরা।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:০২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আবারও জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেল ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মাতৃ মা বিভাগের চিকিৎসকেরা। শঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে দ্রুত চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিরাপদে প্রসব করানো সম্ভব হয়েছে। সুস্থ রয়েছে সদ্যজাত শিশুটিও।

বাসন্তীর ঢুঁড়ি এলাকার তালদা চরপাড়ার বাসিন্দা ফরিদা মোল্লার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় গত শুক্রবার। পরিবারের সদস্যেরা টোটোয় করে তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি জ্ঞান হারান। তাঁকে নিকটবর্তী একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে রোগীর অবস্থা দেখে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রেফার করেন।

ক্যানিং হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, ফরিদা যখন পৌঁছন, তাঁর শরীর ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল, হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ নির্ণয় করা যাচ্ছিল না। প্রাথমিকভাবে জরায়ু ফেটে গিয়ে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে আশঙ্কা করেন চিকিৎসকেরা।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শ্রুতর্ষী মণ্ডল ও শল্য চিকিৎসক দিব্যাঙ্গনা মিত্র। কর্তব্যরত নার্সদের তৎপরতায় দ্রুত অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত করা হয়। দীর্ঘক্ষণ অস্ত্রোপচারের পর ফরিদা কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় জরায়ু বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। চিকিৎসকেরা জানান, দুটি অস্ত্রোপচারই সফল হয়েছে।

অস্ত্রোপচারের পরে মা ও সদ্যজাতকে আইসিইউতে রাখা হয়। শিশুটির কিছু শারীরিক সমস্যা থাকায় তাকে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে মা ও সন্তান দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন। বুধবার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল থেকে ফরিদাকে ছুটি দেওয়া হয়। শিশুটি এখনও চিকিৎসাধীন। তবে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফরিদা বলেন, “আমি বেঁচে ফিরব, তা ভাবতে পারিনি। হাসপাতালে আমার জীবন বাঁচাতে সবাই যে ভাবে এতটা লড়াই করেছেন, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।”

চিকিৎসক শ্রুতর্ষী বলেন, ‘‘রোগীর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে রেফার করার কোনও সুযোগ ছিল না। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে অস্ত্রোপচার করাই একমাত্র পথ ছিল।’’ চিকিৎসক দিব্যাঙ্গনা বলেন, ‘‘এটি দলগত পরিশ্রমের ফল।’’ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মাতৃ মা বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের এই সম্মিলিত প্রয়াসের প্রশংসাকরেছেন হাসপাতাল সুপার পার্থসারথী কয়াল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Canning

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy