ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে সামাজিক ন্যায় দফতরের মন্ত্রী রামদাস আঠওয়ালেকে স্বাগত জানালেন শান্তনু ঠাকুর৷ ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
লোকসভা ভোটের আগে মতুয়াদের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামদাস আঠওয়ালে।
বৃহস্পতিবার তিনি মতুয়াদের পীঠস্থান, উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন। হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন রামদাস। পরে বলেন, ‘‘মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবি বহু বছরের। লোকসভা ভোটের আগে মতুয়াদের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। তাঁদের ন্যায় পাওয়া উচিত।’’ পাশাপাশি তাঁর কথায়, ‘‘মতুয়ারা যাতে নাগরিকত্ব পান, সে জন্য আমি এবং শান্তনু ঠাকুর চেষ্টা করছি। কেন্দ্রীয় সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’
রামদাসের মন্তব্যের বিষয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘সিএএ ওঁর দফতরের বিষয় নয়। তবে উনি বলেছেন, ঠিকই আছে। নাগরিকত্ব একটা বড় ব্যাপার। মানুষের স্বার্থে তা হওয়া উচিত।’’
কয়েক বছর আগে নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন (সিএএ) তৈরি হলেও আজও কার্যকর হয়নি। যা নিয়ে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। কিছু দিন আগে ঠাকুরবাড়িতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে সিএএ কার্যকর হবে। আগামী ভোটে বনগাঁ, রানাঘাটের মতো মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় সিএএ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন। কেন্দ্র বা বিজেপি সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কী পদক্ষেপ করে, সে দিকে তাকিয়ে আছেন মতুয়া ও উদ্বাস্তু মানুষদের বড় অংশ।
তৃণমূল অবশ্য সিএএ নিয়ে ভিন্ন অবস্থানে। রামদাসের মন্তব্য প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘সিএএ রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। গোটা বিষয়টি কেন্দ্র সরকারের। তারাই আইন করেছে। ২০১৯ সালে কেন্দ্র তথা বিজেপি ভোটের জন্য নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের ভাঁওতা দিয়েছে। এটা মতুয়ারা ধরে ফেলেছেন। কয়েক মাস পরে লোকসভা ভোট, তাই আবার কেন্দ্রের মন্ত্রীরা পরিযায়ী পাখির মতো এসে নাগরিকত্ব নিয়ে ভাঁওতা দিতে শুরু করেছেন।’’ মমতার কথায়, ‘‘মতুয়ারা যে ন্যায় পাননি, তা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট।’’
মমতা জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর ধর্মতলায় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তনের দাবিতে। কারণ, এই আইনে মতুয়াদের উদ্বাস্তু, অ-নাগরিক কথা বলা হয়েছে। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘মতুয়ারা ভোট দেন, তাঁদের সরকারি নানা পরিচয়পত্র আছে। তাঁরা আগে থেকেই এ দেশের নাগরিক। সিএএ-র নামে জটিলতা তৈরি করে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে
দিয়ে জলঘোলা করতে চাইছে বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy