Advertisement
E-Paper

লাইব্রেরি যেতে চাইছে কচিকাঁচারা

‘কানের ভিতরে পর্দা ছাড়া আর কী থাকে?’ ‘এই পৃথিবী, সমুদ্র কে তৈরি করেছে?’— সুন্দরবন বালিকা বিদ্যালয়ের (প্রাথমিক কো-এড) চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র দেবরাজ পাঠকের মনে এই প্রশ্নগুলি এসেছিল। কাকদ্বীপের সরকারি গ্রামীণ গ্রন্থাগার, বিদ্যাসাগর সাধারণ পাঠাগারে বই ঘেঁটে সে এ সব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছে।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০২:১৭

‘কানের ভিতরে পর্দা ছাড়া আর কী থাকে?’ ‘এই পৃথিবী, সমুদ্র কে তৈরি করেছে?’— সুন্দরবন বালিকা বিদ্যালয়ের (প্রাথমিক কো-এড) চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র দেবরাজ পাঠকের মনে এই প্রশ্নগুলি এসেছিল। কাকদ্বীপের সরকারি গ্রামীণ গ্রন্থাগার, বিদ্যাসাগর সাধারণ পাঠাগারে বই ঘেঁটে সে এ সব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছে।

এমনই সব প্রশ্ন এখন আসছে মহকুমা সদরের ওই গ্রামীণ গ্রন্থাগারে। ইন্টারনেট, মোবাইলের নাগাল যারা এখনও পায়নি, সেই সমস্ত কচিকাঁচাদের এখন নতুন করে গ্রন্থাগারমুখী করার চেষ্টা চলছে শহরের একমাত্র গ্রন্থাগারে। তাতে সাড়াও মিলছে। প্রচুর বাচ্চা আবার নতুন করে গ্রন্থাগারের দিকে আসছে। নিজে হাতে লিখে নানা রকম প্রশ্ন আনছে। বই ঘাঁটছে।

কাকদ্বীপ গ্রামীণ গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক দীপক মাইতি জানালেন, ‘‘কাকদ্বীপের একটা বড় অংশের বাচ্চা দরিদ্র পরিবার থেকে স্কুলে আসে। এখনও সকলের হাতে মোবাইল বা ইন্টারনেট পৌঁছয়নি। কিন্তু পড়াশোনা, বা জানার ইচ্ছে আছে অনেকেরই। তাই আমরা গত বছর থেকে চালু করেছি ‘আমার জিজ্ঞাসা বিভাগ’। এতে অনেক বাচ্চা প্রশ্ন করছে। তার উত্তর বিভিন্ন বই থেকে দেওয়ার চেষ্টাও করছি।’’ বড় সদস্যদের সংখ্যা দিন দিন কমছে। কচিকাঁচাদের যে বিভাগটি কাকদ্বীপ গ্রামীণ গ্রন্থাগারে ছিল তাতেও নতুন নতুন কিছু করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন গ্রন্থাগার পরিচালন কমিটি। তাই নতুন নতুন প্রয়োগ করা হচ্ছে বাচ্চাদের মধ্যে। কিন্তু কেন এ সব প্রশ্ন জানতে বাচ্চারা গ্রন্থাগারে আসবে, স্কুলের শিক্ষকদের কাছেই তো তা জানতে পারে?

গ্রন্থাগারিক দীপকবাবুর দাবি, বেশিরভাগ স্কুলেই রুটিনমাফিক গতানুগতিক পড়াশোনা হয় সময় ধরে। অনেক বাচ্চা আরও বেশি জানতে চায়, রেফারেন্স বই পড়তে চায়। তারাই এখানে আসছে। প্রায় ২০৫১ জনের মতো স্কুল ছাত্র সদস্য। তবে এখন নিয়মিত ভাবে গ্রন্থাগারের সঙ্গে যোগ রেখে চলে শ’দেড়েক বাচ্চা। তাদের মধ্যেই রয়েছে দেবরাজ, মনীষা, শৌমিকা, গোপা, প্রিয়ঙ্কারা। ওরা সকলেই বিদ্যাসাগর পাঠাগার-লাগোয়া প্রাথমিক স্কুলে পড়ে।

কী ভাবে বাচ্চাদের উৎসাহ জোগান? গ্রন্থাগারের সম্পাদক সৌমিত বসুর কথায়, ‘‘একটু বড় ক্লাস হয়ে গেলেই তো মোবাইলের দাপট। তাই আপাতত কিছু প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের বলছি, বাচ্চাদের মনে অনেক রকম প্রশ্ন আসতে পারে, দমিয়ে দেবেন না। আমরা স্লিপ দিয়ে যাচ্ছি। লিখে জমা দিক, আমরা উত্তর দেবো।’’ আগ্রহী হচ্ছে পড়ুয়ারাও। কোনও প্রশ্ন এলে শিক্ষকের কাছে বা গ্রন্থাগারে গিয়ে ‘আমার জিজ্ঞাসা’র স্লিপ চেয়ে নিয়ে আসছে তারা। কয়েক দিনের মধ্যেই উত্তরও পেয়ে যাচ্ছে। একটু বড় ছাত্রছাত্রী হলে তাদের কিছুটা উত্তর দিয়ে, কিছুটা রেফারেন্স দিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রন্থাগার থেকে। গত ডিসেম্বর থেকে চলছে এই ব্যবস্থা।

Children Library
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy