Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Idol Immersion Ceremony

বিসর্জনে কাছাকাছি এল না দুই দেশ 

ক্লাবগুলির মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে নদীতে প্রতিমা নিয়ে নামার উৎসাহ ক্রমশ কমছে। গত বছর নদীতে নৌকো, লঞ্চ খুব কম নেমেছিল।

বাংলাদেশের দিকে ইছামতীর পাড়ে প্রতিমা।

বাংলাদেশের দিকে ইছামতীর পাড়ে প্রতিমা। ছবি: নবেন্দু ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
টাকি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫৩
Share: Save:

টাকিতে বিসর্জনকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশের মানুষের কাছাকাছি আসাটা এখন অতীত।

বহু বছর ধরে দুর্গাপুজোর বিসর্জন উপভোগ করতে অনেক পর্যটকেরা উৎসাহ নিয়ে আসেন টাকিতে। তবে বাংলাদেশের দিক থেকে গত কয়েক বছর ধরে নৌকো খুব কম নামায় উৎসাহ হারাচ্ছেন তাঁরা।

টাকির ইছামতীতে মঙ্গলবার ছিল বিসর্জন। দেখা গেল, বাংলাদেশের জলসীমায় এ বার একটিও নৌকো নামেনি। একটি মাত্র প্রতিমা বাংলাদেশের দিকে নদীর পাড়ে রাখা ছিল। সেই সঙ্গে কিছু বাংলাদেশের মানুষ ইছামতীর পারে ভিড় জমিয়েছিলেন। ভারতের দিকে গত বছরের তুলনায় এ বার অবশ্য অনেক বেশি সংখ্যায় নৌকো ও লঞ্চ ইছামতীতে নেমেছিল। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ছিল প্রায় ১০০। তবে ভারতের দিক থেকে প্রতিমা নৌকোয় তোলা হয়েছিল বড় জোর ১০-১১টি। টাকির বিভিন্ন ঘাটে ২০-২৫টি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। বেশিরভাগ পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমা নৌকোয় তোলেননি। বিভিন্ন ঘাট থেকেই নদীতে বিসর্জন দিয়েছেন।

ক্লাবগুলির মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে নদীতে প্রতিমা নিয়ে নামার উৎসাহ ক্রমশ কমছে। গত বছর নদীতে নৌকো, লঞ্চ খুব কম নেমেছিল। সেই সঙ্গে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিমা নৌকোয় তোলা হয়েছিল। এ বার যাতে বেশি করে প্রতিমা নিয়ে নদীতে নামেন পুজো উদ্যোক্তারা, সে জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু শেষমেশ সেই আবেদনে তেমন সাড়া মিলল না। ফলে বিসর্জন দেখতে দূরদূরান্ত থেকে হোটেল ভাড়া করে পুজোর কয়েক দিন যাঁরা টাকিতে ছিলেন, তাঁরা কিছুটা হতাশ।

কলকাতার হাতিবাগানের থেকে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, কলকাতায় পুজো না দেখে সস্ত্রীক টাকিতে এসেছিলেন বিসর্জন উপভোগ করবেন বলে। এক দিনের জন্য ঘর ভাড়া না পেয়ে পুজোর চার দিন টাকিতে একটি হোটেল ভাড়া করেন। বিসর্জন দেখাই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু বাংলাদেশের কোনও নৌকো নদীতে নামেনি বলে তাঁরা হতাশ। নদীতে প্রতিমাও তেমন দেখতে পাননি। পরের বার আর আসার ইচ্ছা নেই বলে জানালেন।

কেন এই পরিস্থিতি?

টাকির থুবা ব্যায়াম সমিতি ক্লাবের সম্পাদক কমল ঘোষ বলেন, ‘‘বছর ছ’য়েক আগে শেষবারের মতো নদীতে প্রতিমা নিয়ে আমরা নেমেছিলাম। আর প্রতিমা নৌকোয় তোলা হয় না। নৌকো ভাড়া প্রায় ২০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ পড়ে যায়। যা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।" টাকি পুবের বাড়ির দুর্গাপুজো এখানকার ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির মধ্যে একটি। এই পুজোর রীতি হল, নদীতে জোড়া নৌকোর মাঝে বাঁশের উপরে প্রতিমা রেখে বিশেষ পদ্ধতিতে বিসর্জন দেওয়া। কিন্তু গত কয়েক বছরের মতো এ বারও প্রতিমা নৌকোয় তোলা হয়নি।

পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ভোট আছে সামনে। তাই হয় তো নাগরিকদের নৌকো নিয়ে নদীতে নামতে দেওয়া হয়নি। আমাদের দিক থেকে গত বারের তুলনায় কয়েকটি প্রতিমা বেশি নেমেছিল নদীতে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, এ বার সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল টাকিতে বিসর্জনকে কেন্দ্র করে। বেশ কয়েক জন উচ্চপদস্থ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তা এসেছিলেন। নিরাপত্তায় ছিল কড়াকড়ি। নদীর মাঝবরাবর নিয়ন্ত্রণ রেখা তৈরি করা হয় নৌকো ও দড়ি দিয়ে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2023 taki
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE