Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩
Deganga

নিজের স্কুলে খেলার মাঠ কিনতে জমানো টাকা তুলে দিল অনুজিৎ

দেগঙ্গা এই স্কুলের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে সম্প্রতি স্কুলের নিজস্ব খেলার মাঠ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাক্তনী ও বাসিন্দারা মিলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছেন চাঁদা তোলার জন্য।

শিক্ষকের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে খুদে অনুজিৎ। ছবি: সুদীপ ঘোষ

শিক্ষকের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে খুদে অনুজিৎ। ছবি: সুদীপ ঘোষ

ঋষি চক্রবর্তী
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৪
Share: Save:

স্কুলে খেলার মাঠ নেই। মাঠ তৈরির জন্য জমি কেনার তোড়জোড় শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এলাকার বাসিন্দা, প্রাক্তন ছাত্রদের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। সেই খবর পৌঁছয় স্কুলেরই ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া অনুজিৎ বিশ্বাসের কানে। নিজের জমানো হাজারখানেক টাকা নিয়ে সে হাজির প্রধান শিক্ষকের কাছে। জমি কেনার জন্য প্রধান শিক্ষকের হাতে সেই টাকা তুলে দেয় সে।

Advertisement

খুদে পড়ুয়ার এ হেন আচরণে অবাক শিক্ষকেরা। বেড়াচাঁপার দেউলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ঘটনা।

দেগঙ্গা এই স্কুলের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে সম্প্রতি স্কুলের নিজস্ব খেলার মাঠ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাক্তনী ও বাসিন্দারা মিলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছেন চাঁদা তোলার জন্য। ৪৯ শতক জমি কেনা হবে বলে ঠিক হয়েছে। যার বাজার দর প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা।

বিপুল অঙ্কের টাকা কী ভাবে জোগাড় করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সে কথাই শুনেছিল ছোট্ট অনুজিৎ। দিন কয়েক আগে প্রধান শিক্ষককে সে জানায়, মাঠ কেনার তার জমানো এক হাজার টাকা দিতে চায়।

Advertisement

চমকে ওঠেন প্রধান শিক্ষক শেখ নিজাম হোসেন। কাছে ডেকে জানতে চান, এই টাকা সে পেল কী ভাবে? অনুজিৎ জানায়, এটা তার জমানো টাকা। পরে অনুজিতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রধান শিক্ষক। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুজিতের ঠাকুমা যত দিন বেঁচেছিলেন, নাতিকে কিছু কিছু হাতখরচ দিতেন। ঠাকুমা মৃত্যুর আগে অনুজিতের নামে কিছু জমিও লিখে গিয়েছেন। নারকেল-সহ নানা ফলের গাছ রয়েছে সেই জমিতে। ফল বিক্রির টাকাও অনুজিতকে হাতখরচ হিসেবে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তার ঠাকুমা। এ সব টাকাই জমিয়েছে ছেলেটি।

অনুজিতের কথায়, “অনেক টাকা লাগবে শুনেছি মাঠ কিনতে। আমরা সবাই টাকা দিলে তবেই কেনা সম্ভব। আর মাঠ হলে তো সকলে ভাল করে খেলাধুলা করা যাবে। তাই যা পেরেছি, স্যারকে দিয়েছি।”

প্রধান শিক্ষক বলেন, “এইটুকু একটা ছেলেও বুঝেছে, স্কুলের খেলার মাঠের কতটা দরকার। এ ভাবে সকলে এগিয়ে এলে স্কুলের নিজস্ব খেলার মাঠের স্বপ্ন সফল হবেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.