ভেঙে পড়ে আছে মিড ডে মিল রান্নার ঘর। নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মূল্যায়ণে প্রাথমিক শিক্ষায় বড় রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেরার শিরোপা পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, পরিকাঠামো থেকে শিক্ষকের অভাব-সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রাথমিক স্কুলগুলি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার
মাথার উপরে চাল উড়েছিল ঝড়ে। রান্নাঘরের চুলো জ্বালাতেও বিপাকে পড়তে হয় মিড ডে মিল কর্মীদের। খোলা আকাশের নীচে পাত পেড়ে খেতে বসে ছোটরা। এই অবস্থাতেই চলছিল স্কুল। করোনা আবহ কাটিয়ে উঠে ফের ক্লাস চালু হলেও সমস্যার নিরসন হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন অভিভাবক-শিক্ষক মহলে।
এ দিকে, পাকা দোতলা স্কুলভবনে নীল-সাদা রঙের প্রলেপ রয়েছে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে পলেস্তারা নেই। নষ্ট হতে বসেছে দেওয়াল। ঘরের সংখ্যাও অপর্যাপ্ত। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই।
এমনই অবস্থা সাগরের ধবলাট পঞ্চায়েতের চেমাগাড়ি রাসমণি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। স্কুল সূত্রে জানা গেল, প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিজস্ব পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। খুদে পড়ুয়ারা বাড়ি থেকেই জল আনে। প্রয়োজনে বাইরে থেকে পানীয় জল আনতে হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, লকডাউনের আগে একটি নলকূপ বসানো হয়েছিল। কিন্তু তা ছ’মাসের মধ্যে খারাপ হয়ে গিয়েছে।
মিড ডে মিলের রান্নাঘরটি বেহাল। আমপানে মাটির দেওয়ালের ঘরের ছাউনি উড়ে যায়। জানলা-দরজা ভেঙে গিয়েছে। রোদ-জলে রান্নার বাসন, অন্যান্য সামগ্রীর বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ২০১৫ সালে স্কুলে একটি খাওয়ার ঘর তৈরি হয়েছিল। তার টালির চাল আমপানে উড়ে গিয়েছে। শ্রেণিকক্ষে বা খোলা আকাশের নীচেই খাওয়াদাওয়া করতে হয় ছোটদের।
স্কুলে ঘরের সংখ্যা মাত্র তিনটি। অপেক্ষাকৃত বড় ঘরটিতে ক্লাস চলার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বসারও ব্যবস্থা হয়েছে। আলমারি, পাঠাগার ও খাতাপত্রের রাখতেও ভরসা এই ঘর। বাকি দু’টি ঘরে তিনটি শ্রেণির ক্লাস চলে। শৌচাগার থাকলেও জলের ব্যবস্থা নেই। পড়ুয়ার সংখ্যা ৭০। তিনটি ঘরে ৫টি ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। অভিভাবক সরস্বতী হাজরা বলেন, ‘‘এখন শুনছি করোনার নতুন স্ট্রেন এসেছে। এর মধ্যে একই ঘরে গাদাগাদি করে ছেলেমেয়েরা বসলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।’’ পার্শ্বশিক্ষক স্বপন সিংহ বলেন, ‘‘আমপানের পর থেকে স্কুল বেহাল। সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। স্কুল খুললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।’’ এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘রান্না-খাওয়াই তো মুশকিল এই স্কুলে।’’ সাগর ব্লকের দক্ষিণ চক্রের স্কুল পরিদর্শক নাসিরুদ্দিন মিস্ত্রি বলেন, ‘‘স্কুলের সমস্যাগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। স্কুল খোলার পরে আমরা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেব। জল ও অন্যান্য পরিকাঠামোগত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy