Advertisement
E-Paper

বৈদ্যুতিক চুল্লি খারাপ, সমস্যা দেহ সৎকারে

করোনায় মৃতদের সৎকারে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে শ্মশানগুলিতে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৭:০১
এই বৈদ্যুতিক চুল্লিতে আপাতত বন্ধ দাহকার্য।

এই বৈদ্যুতিক চুল্লিতে আপাতত বন্ধ দাহকার্য। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খারাপ হয়ে গিয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লি। ফলে করোনায় মৃতদের দেহ সৎকারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন কেএমডিএ, ইউডিএমএ দফতরের আধিকারিক এবং মহকুমাশাসকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলাশাসক জেলা স্বাস্থ্য দফতর, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সোমবার আলিপুরে কোভিড বিধি মেনে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

গত বছর ক্যানিংয়ের মাতলা নদীর চরে বৈদ্যুতিক চুল্লিতে করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার করার কাজ শুরু হয়। রবিবার রাতের পর থেকে ওই চুল্লি খারাপ হয়ে যায়। করোনায় মৃতদের দেহ সৎকারের জন্য ওই সময়ে ক্যানিং ছাড়াও পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বারুইপুরের কীর্তনখোলা, মহেশতলা, ডায়মন্ড হারবার এবং মন্দিরবাজারে সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ক্যানিংয়ের মতোই বারুইপুরের কীর্তনখোলার বৈদ্যুতিক চুল্লিও ঠিকমতো কাজ করছে না। ইতিমধ্যে ওই শ্মশানের মেরামতির কাজ শুরু করেছে কেএমডিএ। এই মাসের মধ্যে যাতে মেরামতির কাজ শেষ হয়, তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর প্রতিদিন করোনায় মৃতদের সৎকারে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে ওই সব শ্মশানগুলিতে। তা ছাড়া, প্লাস্টিকে মোড়া দেহগুলি দাহ করতে গিয়েও সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই সমস্ত বৈদ্যুতিক চুল্লি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য নির্দিষ্ট কোনও এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া ছিল না। যে কারণে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সমস্যা তৈরি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলাশাসক ইতিমধ্যে মহকুমাশাসক ও বিডিওদের বৈদ্যুতিক চুল্লির পাশাপাশি কাঠের শ্মশান তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও, করোনায় মৃতদের দেহ বহনের জন্য শববাহী গাড়ি প্রতিটি পুরসভায় দু’টি করে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য ২৫টি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া, করোনায় মৃতদের মৃত্যুর শংসাপত্র শ্মশান থেকেই দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। গোটা কাজ সম্পন্ন করতে বিভিন্ন পুরসভা ও মহকুমাশাসকের দফতরে বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। ওই কন্ট্রোলরুম থেকে ভোটার তালিকা দেখে আশির ঊর্ধ্বে বয়স্কদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এর পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে জেলা প্রশাসন। বিশেষ করে অক্সিজেন সরবরাহের উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। এত দিন হাওড়া থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হত জেলায়। পাশাপাশি নতুন করে আরও অক্সিজেন সরবরাহকারীকে নিযুক্ত করা হচ্ছে। জেলায় আরও বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য কন্ট্রোলরুম থেকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফোন করে খবর নেওয়া হচ্ছে অক্সিজেনের জোগান ঠিক আছে কিনা। সেই মতো তাদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি করা হচ্ছে। কেএস রায়, এমআর বাঙুর, ক্যানিং, কাকদ্বীপ, বারুইপুর হাসপাতালে পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন হাসপাতালে বেড বাড়ানো হচ্ছে। এমআর বাঙুরে ১০৬ বেড, ক্যানিংয়ে ১০০ বেড, কাকদ্বীপে ৪০টি বেড, গার্ডেনরিচে ৭০টি বেড বাড়ানো হচ্ছে। পৈলান, কামালগাজি এবং মহেশতলায় আরও সেফহোম খোলা হচ্ছে। যে সমস্ত হাসপাতালগুলিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে পানীয় জল, ছাউনি, পাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের কাছে আরও বেশি করে ভ্যাকসিন চাওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ বেড বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

জেলাশাসক বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। যে সমস্ত বৈদ্যুতিক চুল্লি খারাপ হয়ে গিয়েছে, তা দ্রুত মেরামতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’

ক্যানিং ১ বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে টানা চলার কারণে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে চুল্লিতে। ইতিমধ্যেই ইঞ্জিনিয়ার সারাইয়ের কাজ শুরু করেছেন। আশা করা যাচ্ছে, দিন দু’য়েকের মধ্যেই এটিকে সচল করা যাবে।”

COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy