ফাইল চিত্র
পরিযায়ী শ্রমিকেরা এলাকায় ফিরতেই বনগাঁ মহকুমায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা পজ়িটিভ মানুষের সংখ্যা। শ্রমিকেরা ফিরলেও তাঁদের সকলের লালারস পরীক্ষা করা হচ্ছে না। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত বনগাঁ মহকুমায় করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা ৫৮। সব থেকে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন গাইঘাটা ব্লকে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ জন। বনগাঁ ও বাগদা ব্লকে আক্রান্তের সংখ্য ১৩ জন করে। বনগাঁ শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ জন। আক্রান্তদের বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। এই মুহূর্তে নিভৃতবাস বা কোভিড হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা চলছে ২০ জন আক্রান্তের। মহকুমায় কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। পরিযায়ী শ্রমিক ছাড়া আর যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই কলকাতা যোগ রয়েছে। কেউ পুলিশ কর্মী, কেউ বা ব্যবসা বা চিকিৎসার প্রয়োজনে কলকাতায় গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবারই বনগাঁ শহরের বাসিন্দা এক ব্যক্তির করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আনাজ ব্যবসায়ী। কলকাতার কোলে মার্কেটে আনাজ নিয়ে গিয়েছিলেন।’’
সম্প্রতি ভিন্ রাজ্যে কর্মরত কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। সরকারি ভাবে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। নিভৃতবাসে রাখা হচ্ছে। যাঁরা ব্যক্তি উদ্যোগে ফিরছেন, তাঁদের অনেককেই থার্মাল স্ক্রিনিং হচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের শারীরিক কোনও উপসর্গ থাকলে তবেই লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। মানুষের প্রশ্ন, শারীরিক উপসর্গ ছাড়াও অনেকে করোনা পজ়িটিভ হচ্ছেন। তা হলে কেন সকলের পরীক্ষা করা হবে না? স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, স্কুল নিভৃতবাসে থাকা মানুষের উপরে নজরদারি রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা রোজ তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। সেখানে কারও কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই লালারস পরীক্ষা করা হচ্ছে। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘মঙ্গলবারই চৌবেড়িয়া এলাকায় স্কুল নিভৃতবাসে থাকা এক ব্যক্তির উপসর্গ দেখা দেওয়া মাত্র তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। ব্যারাকপুরের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তা ছাড়া, প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। যদি কারও শরীরে তাপমাত্রা বেশি থাকে, তাঁদেরও লালারস নেওয়া হচ্ছে।’’
স্বাস্থ্য দফতর জানায়, অনেকেই স্কুলে তৈরি হওয়া নিভৃতবাসে থাকছেন না। বাড়িতে থাকছেন। মঙ্গলবার কেরল থেকে ফেরেন বাগদার দুই শ্রমিক। বাসিন্দাদের চাপে একজন নিভৃতবাসে যান, অন্যজন বাড়িতেই রয়েছেন। নিভৃতবাসে আলো, পাখা, জল, খাবার নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠছে। গোপনে কেউ কেউ বাড়িও চলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। নিভৃতবাসে রেখে করোনা পজ়িটিভের চিকিৎসা সফল ভাবে চলছে গাইঘাটা ব্লকে। বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘গৃহনিভৃতবাস রেখে চিকিৎসা করে ইতিমধ্যেই ৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাড়িতে রেখে চিকিৎসা নিয়ে গ্রামবাসী কোনও বিরোধিতা এখন আর করছেন না।’’
তবে মহকুমার বড় অংশের মানুষ এখন মাস্ক ছাড়াই বাজার-হাটে বেরোচ্ছেন। শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে যাতায়াত করছেন। বনগাঁ শহরে মানুষকে সচেতন করতে মাইক প্রচার চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy