Advertisement
E-Paper

ছ’মাসের বাচ্চাটা খাবে কী, চিন্তা জ্যোৎস্নার

জ্যোৎস্নাদের গ্রামের নাম হাঁটা। চারদিকে ধূ ধূ ধানজমির মাঝখানে বিষ্ণুপুর ১ ব্লকের এই গ্রাম।

সমীরণ দাস

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০০:৪৮
ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

ভাঙা মাটির বাড়িটার কাছে পৌঁছতেই হুড়মুড়িয়ে ছুটে এলেন বছর পঁচিশের মহিলা। বাইরের লোক দেখে খানিক স্বগতোক্তির ঢঙেই বললেন, “মাদুর পেতে যে বসতে দেব, সে উপায়ও নেই। ঘরের মাদুরটা কোথায় উড়ে গিয়ে পড়েছে কে জানে!”

মাদুরের সঙ্গে ঘরের চালও উড়েছে জ্যোৎস্না মণ্ডলের। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে ঘরের অন্য জিনিসপত্র। ঝড়ের রাতে অন্য অনেকের মতো দুই শিশুকে কোলে নিয়ে স্থানীয় স্কুলবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন জ্যোৎস্না। ফিরে এসে দেখেন সব শেষ। এখন কার্যত খোলা আকাশের নীচেই চলছে দিনযাপন।

জ্যোৎস্নাদের গ্রামের নাম হাঁটা। চারদিকে ধূ ধূ ধানজমির মাঝখানে বিষ্ণুপুর ১ ব্লকের এই গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, চারদিকটা এত ফাঁকা হওয়ার কারণেই এই এলাকায় ঝড়ের প্রভাব পড়েছে অনেক বেশি। কার্যত একটি বাড়িও আস্ত নেই। গাছ ভেঙেছে শ’য়ে শ’য়ে। কোথাও কংক্রিটের রাস্তা-সহ উপড়ে গিয়েছে গাছ, কোথাও আবার ভেঙে উল্টে পড়েছে আস্ত ট্রান্সফর্মার। বিঘের পর বিঘে জমি জুড়ে নুইয়ে পড়েছে ধান গাছ। ভেজা ধান তুলে কোনও রকমে শুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন চাষিরা। জ্যোৎস্নার মাটির একচালা বাড়িটা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে পাশেই সরকারি প্রকল্পের টাকায় শুরু হওয়া বাড়ির ছাদও। লকডাউনের আগে মুম্বইয়ে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছেন জ্যোৎস্নার স্বামী কৃষ্ণ। বাড়িতে দুই বাচ্চা, আর বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন জ্যোৎস্না। স্বামী দীর্ঘ দিন টাকা পাঠাতে না পারায় এমনিতেই সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন। তার উপরে ঝড়ে ছাদ হারিয়ে দুই শিশু আর দুই বৃদ্ধকে নিয়ে দিশাহারা অবস্থা তাঁর।

ভাঙা বাড়ির দাওয়ায় মাস ছ’য়েকের মেয়েকে কোলে নিয়ে জ্যোৎস্না বলেন, “বাড়িটা পুরো শেষ। কোনও রকমে প্লাস্টিক টাঙিয়ে আছি। জিনিসপত্র সব কোথায় যে ছিটকে গিয়েছে, কিছুই জানি না। বাড়িতে চাল-ডাল কিছু নেই।’’

জ্যোৎস্নার মতোই পরিস্থিতি গ্রামের ঘরে ঘরে। একটু সাহায্যের জন্য হাহাকার করছেন গরিব মানুষগুলো। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সপ্তাহ ঘুরতে চলল, এখনও একটা ত্রিপল পর্যন্ত দেয়নি কেউ। কী ভাবে বেঁচে আছি, কেউ খোঁজও নেয়নি। গ্রামের বাসিন্দা প্রেম সর্দার বলেন, “ঘর-রান্নাঘর বলে তো আর কিছু নেই। সব ভেঙে গিয়েছে। দু’টো ভাত ফুটিয়ে খাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।” সরকারি সাহায্য না পৌঁছলেও, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিছু সাহায্য নিয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংস্থার এক সদস্যের কথায়, “গ্রামের মানুষ বাইরের লোক দেখলেই ভাবছেন, এই বুঝি সরকারি সাহায্য নিয়ে কেউ এল। দ্রুত বেরিয়ে এসে ডেকে নিয়ে যাচ্ছেন ভাঙা বাড়ি দেখাতে। আকুল স্বরে মিনতি করছেন, একটু সাহায্য করার জন্য। আমরা সাধ্য মতো করছি।”

স্থানীয় বিধায়ক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকার সর্বত্র ত্রাণ-ত্রিপল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। হাঁটা গ্রামেও সরকারি ত্রাণ পৌঁছেছে। তবে তারপরেও কেউ যদি ত্রাণ না পেয়ে থাকেন, স্থানীয় নেতৃত্ব

Cyclone Amphan Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy