নিজস্ব চিত্র
এক সময় এই খাদি মন্দিরই সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামের অর্থনীতির ভিত্তি হয়ে উঠেছিল। সেখানে চরকায় কাটা সুতোয় তৈরি বস্ত্র ছড়িয়ে পড়ত গ্রামে গ্রামে। মহাত্মা গাঁধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র ভান্ডারীর তৈরি সেই হটুগঞ্জ খাদি মন্দির আজ আগাছায় ঢেকে গিয়েছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে ভুলতে বসা খাদি মন্দিরের সংস্কারের আর্জি জানাল চারুচন্দ্র স্মৃতিরক্ষা কমিটি।
সালটা ১৯৩০। দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন। সেই সময় গাঁধীর নির্দেশে দক্ষিণবঙ্গ তথা সুন্দরবনে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চারুচন্দ্র ভান্ডারী। আইনজীবীর পেশা ছেড়ে সম্পূর্ণ ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন তিনি। লবণ সত্যাগ্রহে অংশ নিয়ে পুলিশের হাতেও ধরা পড়েছিলেন চারুচন্দ্র। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর হাত ধরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার হটুগঞ্জ, ডায়মন্ড হারবার, কুলপি, করঞ্জলি, হরিনাভি-সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠে খাদি মন্দির। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় চারুচন্দ্রের আমন্ত্রণে ডায়মন্ড হারবারে অধুনা এসডিও গ্রাউন্ডে প্রকাশ্য জনসভা করেছিলেন গাঁধী।
স্থানীয়দের দাবি, হটুগঞ্জের ওই খাদি মন্দির থেকেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থির করতেন চারুচন্দ্র। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলায় প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের মন্ত্রিসভায় চারুচন্দ্র প্রথম খাদ্যমন্ত্রীও হন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাঁর মৃত্যুর পর সংস্কারের অভাবে ওই খাদি মন্দির পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার পথে। চারুচন্দ্র স্মৃতিরক্ষা কমিটির সহ-সভাপতি সিদ্ধানন্দ পুরকাইত বলেন, ‘‘চারুবাবু দেশের গৌরব। তাঁর নাম বর্তমান প্রজন্ম ভুলতে বসেছে। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত খাদি মন্দির আজ ধ্বংসের পথে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ওই খাদি মন্দির সংস্কার করা হোক। নতুন প্রজন্মকে চারুচন্দ্রের ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত করা জরুরি।’’
এ প্রসঙ্গে, ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক অঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘চারুচন্দ্র ভান্ডারী এক জন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত খাদি মন্দিরও ওই ঐতিহ্য বহন করছে। এটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy