বন্দি: শিক্ষিকা। নিজস্ব চিত্র
অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষিকাকে অপসারণের দাবিতে স্কুলগেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামের মানুষ।
শুক্রবার বসিরহাটের সীমান্তবর্তী কলাপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনায় প্রায় তিন ঘণ্টা ক্লাস ঘরে বসে কাটাতে হয় প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না সরকারকে। দুপুরের দিকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য, বসিরহাট নতুন চক্রের স্কুল পরিদর্শকের প্রতিনিধি, শিক্ষাবন্ধু-সহ কয়েকজনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে।
বসিরহাট ১ ব্লকের ইটিন্ডার সীমান্তবর্তী কলাপোতা গ্রাম। কলাপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে পার্শ্বশিক্ষক-সহ তিনজন শিক্ষক এবং ৪৫ জন পড়ুয়া। গ্রামবাসীদের দাবি, একটা সময়ে ওই স্কুলে আড়াইশোর বেশি ছাত্রছাত্রী পড়ত। পঠনপাঠনের মান ভাল ছিল। তবে বর্তমান প্রধান শিক্ষিকার অপটু পরিচালনা, দুর্ব্যবহারের জেরে কেউ আর ছেলেমেয়েদের ওই স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। স্কুলে তালা ঝোলার উপক্রম হয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা বেলা ১২টায় এসে ৩টের মধ্যে ক্লাস সেরে বেরিয়ে যান বলেও অভিযোগ। পোকা-ভর্তি চাল-ডাল দিয়ে মিড ডে মিল রান্না হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এমনই সব দাবিতে এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে ঢুকলে গ্রামের মানুষ গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভে সোচ্চার হন। খবর পৌঁছয় প্রশাসনের নানা মহলে। গাছা-আখাড়পুর পঞ্চায়েত সদস্য শিশির দত্ত, এসআইয়ের প্রতিনিধি আরশাদ আলি মোল্লা, শিক্ষাবন্ধু মলয় চক্রবর্তী-সহ কয়েকজন এলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। একদল জনতা মিড ডে মিলের পোকা লাগা চাল-ডাল মেঝেতে ছড়িয়ে দেন। অবিলম্বে প্রধান শিক্ষিকাকে স্কুল থেকে সরিয়ে দিতে হবে বলে দাবি ওঠে। স্কুলের একটি ক্লাস ঘরে গ্রামের মানুষ এবং প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্যরা আলোচনায় বসেন। এসআই-এর প্রতিনিধি আরশাদ বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষের লিখিত অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’
অভিভাবক রোশনারা বিবি, মনিরুল ইসলাম, হাসানুর গাজি, সাহেব আলি, হাফিজুল গাজিরা বলেন, ‘‘নিজেদের ব্যবহারের সুবিধার জন্য ছাত্রছাত্রীদের শৌচালয় ব্যবহার করতে না দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলের জমিতে আপনা থেকে বেড়ে ওঠা গাছের পেঁপে মিড ডে মিলে পোকা ভর্তি চালের ভাতের সঙ্গে খেতে দেওয়া হয়।’’ ইয়াসিন সর্দার, মেরিনা বিবি, আসরাফুল গাজিদের কথায়, ‘‘প্রধান শিক্ষিকার ব্যবহারের জন্য দিন দিন পড়ুয়া কমছে।’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করে স্বপ্নাদেবী বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে যা মেলে, তাই দিয়েই মিড ডে মিলের রান্না হয়। বেলা ১১টার মধ্যে স্কুলে আসি। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ক্লাস করার পরে তবে ফিরি। কেউ কেউ মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে সরাতে চাইছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy