E-Paper

রাজকোষ ভরাচ্ছে মাটি ব্যবসার টাকা

বারাসত ২ ব্লকের কীর্তিপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে এলাকার শতাধিক বিঘা চাষের জমি থেকে বেআইনি ভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে মাছ চাষের ভেড়ি করার জন্য।

ঋষি চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫ ০৬:৫৮
মাটি কাটার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে বহু জায়গায়।

মাটি কাটার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে বহু জায়গায়। —ফাইল চিত্র।

টাকা মাটি, মাটি টাকা— এই এখন আপ্তবাক্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়।

বছরভর অভিযোগ ওঠে বেআইনি মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। তেমনই গত অর্থবর্ষে জেলার রাজস্ব খাতে বেশি টাকা এসেছে এই মাটি থেকেই! মাটি থেকে আয় বাড়াতে বেশ কিছু পরিকল্পনাও করেছে জেলা প্রশাসন। যদিও অভিযোগ উঠছে, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে পুলিশ-প্রশাসন সকলেই মাটি মাফিয়াদের থেকে ‘টাকা নিয়ে’ বেআইনি মাটি কারবার সক্রিয় রেখেছে।

বারাসত ২ ব্লকের কীর্তিপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে এলাকার শতাধিক বিঘা চাষের জমি থেকে বেআইনি ভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে মাছ চাষের ভেড়ি করার জন্য। দু’দিন আগে মাটির গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। জানা গিয়েছে, শুধু কীর্তিপুর ২ পঞ্চায়েত নয়, শাসন, মজলিশপুর, দাদপুর, ধোকরা, কামদুনি, ফলতি, দুগদিয়া ও বেলিয়াঘাটা পঞ্চায়েত এলাকা থেকেও এ ভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাটি নিয়ে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় মাটি ছড়িয়ে পড়ে পিচ্ছিল হচ্ছে পথ। বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে।

বেআইনি মাটির ব্যবসার খবর জানেন না বলে দাবি করে কীর্তিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা পাত্র বলেন, ‘‘অভিযোগ না করলে জানব কী করে, যে মাটি চুরি হচ্ছে!’’ বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার পর্যবেক্ষক শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের একাংশের মদতেই দিনে-রাতে অবাধে মাটি পাচার চলছে। এতে জমির প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে। এ ভাবে মাটি পাচার চলতে থাকলে এক সময়ে চাষযোগ্য জমি খুঁজে পাওয়া যাবে না!’’

জেলা প্রশাসনের দাবি, গত অর্থবর্ষে ৩৮ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। যার মধ্যে মাটি ব্যবসা থেকে এসেছে দু’কোটির বেশি। এই প্রথম মাটি ব্যবসা থেকে এত টাকা আয় হয়েছে হাড়োয়া, শাসন, দত্তপুকুর, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, বসিরহাট-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে। অনুমতি নিয়ে মাছ চাষের জন্য মাটি কেটে জমি নিচু করা থেকে মূলত আয় হয়েছে। সূত্রের দাবি, এত দিন বেআইনি ভাবেই মাটি কেটে বিক্রি করা হত। পুলিশ ছাড়াও ব্লক এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর কড়া হতেই আইনি পথে মাটি ব্যবসা শুরু হয়েছে বহু জায়গায়। যদিও সাধারণ মানুষের বক্তব্য, জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে সারা বছর মাটি কাটা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাটি ব্যবসায়ীর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ও পুলিশ কড়া হলে মাটি ব্যবসা থেকে দু’কোটি শুধু নয় বরং অনেক বেশি টাকা রাজস্ব আদায় হত।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই ব্লকভিত্তিক একটি করে বিশেষ দল গঠন করা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায় নজরদারি করবেন ব্লকের ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা। সেই মতো প্রতিদিন রিপোর্ট আসবে জেলার কাছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Deganga

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy