Advertisement
E-Paper

প্রসবের পরিসংখ্যানে নানা গরমিলের নালিশ হাসপাতালে

সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে বাড়িতে। কিন্তু সেটিই উঠে যাচ্ছে হাসপাতালের খাতায়। শুধু তাই নয়, রোগীদের নির্ধারিত ‘ডায়েট মিল’ (দৈনিক খাবার) না দিয়েও খাতায় দেখানো হচ্ছে সেটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে— এমনই অনেক অভিযোগ উঠেছে ক্যানিং ২ ব্লকের খুঁচিতলা হাসপাতালে। অভিযোগ যে উঠছে, সে কথা মানছে স্বাস্থ্য দফতরও।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০৫

সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে বাড়িতে। কিন্তু সেটিই উঠে যাচ্ছে হাসপাতালের খাতায়। শুধু তাই নয়, রোগীদের নির্ধারিত ‘ডায়েট মিল’ (দৈনিক খাবার) না দিয়েও খাতায় দেখানো হচ্ছে সেটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে— এমনই অনেক অভিযোগ উঠেছে ক্যানিং ২ ব্লকের খুঁচিতলা হাসপাতালে।

অভিযোগ যে উঠছে, সে কথা মানছে স্বাস্থ্য দফতরও। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল সরকার জানান, ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়মের তথ্য পেয়েছি। সেটি জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম দাস মালাকারও বলেন, ‘‘এমন কিছু ঘটনার কথা আমি জেনেছি। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

খুঁচিতলা হাসপাতাল সুত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ জুন হার্দার বাসিন্দা নাজিরা লস্করের নিজের বাড়িতেই প্রসব হয়। তারপরে ওই মহিলার নাড়ি কাটার জন্য খুঁচিতলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সদ্যোজাত সন্তানের ওজন খুব কম হওয়ায় তাঁকে ওই দিনই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয় বলে হাসপাতালের ‘রেফারাল রেজিস্টারে’ দেখানো হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের ‘ডায়েট রেজিস্টার’ অনুযায়ী ১৫ ও ১৬ জুন নাজিরাকে সেখানে খাবার দেওয়া হয়েছে। সেখানেই শেষ নয়, বাস্তবে দু’দিন আগে রেফার হয়ে গেলেও হাসপাতালের ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’ অনুযায়ী, তাঁকে ১৬ জুন হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে।

রোগীদের দৈনিক খাবার নিয়েও দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ এসেছে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কর্তব্যরত নার্স হাসপাতালের ‘ডায়েট রেজিস্টারে’ ১২ জন রোগীকে খাবার দেওয়া হয়নি বলে লিখে দিলেও পরে স্বয়ং ক্যানিং ২ বিএমওএইচ হরিপদ মাঝির উপস্থিতিতে সেই লেখা বদলে লেখা হয়, সব রোগীকেই খাবার দেওয়া হয়েছে।

ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা রেহেনা বিবি, নাজমা পিয়াদাদের ক্ষোভ, প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সকালে শুধু দুধ, পাউরুটি, ডিম দেওয়া হলেও দুপুরে ও রাত্রে কোন খাবার দেওয়া হয়নি। খুঁচিতলা হাসপাতালের দৈনিক খাবার সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের হয়ে ওই হাসপাতালে খাবার দেন সাবির হোসেন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। সাবির জানান, তিনি একই সঙ্গে খুঁচিতলা হাসপাতালের ঝাড়ুদার এবং জীবনতলা থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। তবে দৈনিক খাবারের হিসেবের গোলমাল নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।

বিএমওএইচ হরিপদ মাঝির দাবি, ক্যানিঙের অনেক দুর্গম জায়গা রয়েছে। প্রসূতিদের সেখান থেকে হাসপাতালে আনার সময়ে রাস্তায় প্রসব হয়ে যায়। তারপরে হাসপাতালে নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হয়। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে ডেলিভারি দেখানোয় ভুল কিছু নেই। তবে রোগীদের দৈনিক খাবারে অনিয়মের বিষয়টি তিনি মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘হাসপাতালে একজন নার্স রোগীদের খাবার দেওয়ার সময়ে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। ’’

ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘হাসপাতালে কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড়া হবে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Discrepancies Statistical Records Records of Births Canning
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy