E-Paper

সাগরমেলায় দূষণ প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপের আশ্বাস

কাকদ্বীপ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলার ক’দিন প্রায় ৫০ লক্ষ জলের পাউচ বিলি করা হবে। পাউচ তৈরির জন্য চারটি মোবাইল ওয়াটার মেশিন থাকবে।

সমরেশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৪
গঙ্গাসাগর মেলা।

গঙ্গাসাগর মেলা। —ফাইল চিত্র।

সাগরমেলা আসছে। এ বার ৩০ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থীর সমাগম হবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে এ বারও দূষণ কতটা রোধ করা যাবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন পরিবেশকর্মীরা। প্রশাসন অবশ্য ইতিমধ্যেই নানা পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু পরিবেশকর্মীদের দাবি, প্রশাসন প্রতিবার আশ্বাস দিলেও কার্যক্ষেত্রে তা দেখা যায় না। দূষণ ছড়ায়। বিশেষ করে সমুদ্রের জলে পুণ্যার্থীদের ফেলা নানা রকম বর্জ্যে ক্ষতি হয় জলজ বাস্তুতন্ত্রের।

পরিবেশকর্মীরা জানান, সাগরমেলায় লক্ষাধিক পুণ্যার্থী সমুদ্রতটে স্নান করেন, পুজো দেন। পুজোর ফুল, মালার প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতলে ছেয়ে যায় তট। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই প্লাস্টিক সৈকতে বালি চাপা পড়ে যায়। পরে তা ভেসে যায়। এ ছাড়াও, কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট থেকে ভেসেলে আসার সময়ে পুণ্যার্থীরা গঙ্গাকে প্রণাম জানিয়ে প্লাস্টিকের প্যাকেটে ফুল-মালা মুড়িগঙ্গায় ফেলেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনও নজরদারি থাকে না বলেই অভিযোগ। মেলা চলাকালীন যত্রতত্র মল-মূত্র ত্যাগ করেন অনেকে। এর থেকেও দূষণ ও নানা রোগ ছড়ায়।

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেলা চত্বরে স্থায়ী শৌচালয় থাকছে ২৫০০টি। অস্থায়ী শৌচালয় থাকছে ৩৫০০টি। যদিও লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর জন্য তা পর্যাপ্ত কি না, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

কাকদ্বীপ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলার ক’দিন প্রায় ৫০ লক্ষ জলের পাউচ বিলি করা হবে। পাউচ তৈরির জন্য চারটি মোবাইল ওয়াটার মেশিন থাকবে। ওয়াটার ট্যাঙ্ক থাকবে ৩১৫টি। যদিও প্রতি বছরই মেলা শেষে দেখা যায়, যত্রতত্র জলের পাউচ পড়ে রয়েছে। এর থেকেও প্লাস্টিক দূষণের আশঙ্কা করছেন পরিবেশকর্মীরা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেলা চত্বর প্লাস্টিকমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। এ জন্য মিলিত ভাবে কাজ করছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, জেলা প্রশাসন ও গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। এ বছর মেলায় পরিবেশবান্ধব ১৬ লক্ষ ব্যাগ বিলি করা হবে। গতবারের মতো এ বারও বসানো হবে বর্জ্য নিষ্কাশন যন্ত্র। সাগর ব্লক প্রশাসনের তরফে মেলা চত্বর সাফ রাখার জন্য ৪৫০ জন কর্মী নিয়োগ করা হবে। আবর্জনা নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা থাকবে। বসানো হবে ৪০০০ ডাস্টবিন। মেলা চত্বরের দোকানগুলি থেকেও পরিবেশবান্ধব ব্যাগ বিলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া, পাটের ব্যাগে প্রসাদ বিতরণের জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে প্রশাসন। পর্যটকেরা যাতে প্লাস্টিকের জলের বোতল যেখানে-সেখানে না ফেলেন, সে জন্য মাইকে বিভিন্ন ভাষায় প্রচার চলবে। সমুদ্র দূষণ রুখতে কপিলমুনি আশ্রমের সামনে সৈকত থেকে এক কিলোমিটার গভীরে, ১ নম্বর স্নান ঘাট থেকে ৬ নম্বর স্নান ঘাট জুড়ে থাকবে ভাসমান ‘বুম’। সঙ্গে থাকবে জাল। এই ভাসমান ‘বুম’ জলের উপরিতল থেকে জালকে ভাসিয়ে রেখে সাগরে ভেসে যাওয়া আবর্জনা আটকাবে।

পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “প্রতি বছরই প্রশাসন দূষণ রুখতে নানা পদক্ষেপের কথা বলে। যদিও মেলা শেষে দেখা যায়, দূষণ বেড়েই চলেছে। প্রশাসনের উচিত আরও বেশি সংখ্যায় শৌচাগার বানানো। সৈকতে আবর্জনা বালি-মাটির নীচে জমে থাকছে। প্লাস্টিক বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pollution Sagar Island

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy