Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩

টোটো-রাজে রোজ যানজট, রুদ্ধ বারাসত

পরিবহণ দফতরের হিসেবে কেবলমাত্র বারাসতেই বিভিন্ন রুটে এক হাজারের মতো বাস যাতায়াত করে। ১৬টি রুটে চলে প্রায় ৭৫০ অটো।

জট: বারাসতের রাস্তায় টোটোর সারি। ছবি: সুদীপ ঘোষ

জট: বারাসতের রাস্তায় টোটোর সারি। ছবি: সুদীপ ঘোষ

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:২৭
Share: Save:

টোটো নিষিদ্ধ হয়েছে, তার বদলে চালাতে হবে ই-রিকশা। নিষিদ্ধ হয়েছে ডিজেল চালিত অটো, তার বদলে চালাতে হবে গ্যাসের অটো। আর ট্রেকার, ইঞ্জিন ভ্যান রিকশার মতো গাড়ি তো আগাগোড়াই নিষিদ্ধ। কিন্তু এ সব নিয়ে হেলদোল নেই বারাসতে। পুরনো কোনও যানই বাতিল হয়নি উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদরে। নতুন আর বাতিলের মাঝে পড়ে নাকাল অবস্থা শহরের। এর মধ্যেই অটো-টোটোর মধ্যে ঝামেলা লেগেই রয়েছে। আবার অটো-টোটোর চাপে যাত্রী মিলছে না বলে বাস চালকদের আন্দোলনও চলছে সমান তালে। সব মিলিয়ে প্রতি দিন তীব্র যানজটের শিকার হচ্ছেন সাধারন মানুষ। ঘটছে দুর্ঘটনাও।

Advertisement

পরিবহণ দফতরের হিসেবে কেবলমাত্র বারাসতেই বিভিন্ন রুটে এক হাজারের মতো বাস যাতায়াত করে। ১৬টি রুটে চলে প্রায় ৭৫০ অটো। এ ছাড়াও রয়েছে কিছু ডিজেল চালিত অটো। সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত নতুন ই-রিকশা চলে ১৭৩৩টি। বেআইনি ঘোষণা হলেও প্রায় ৫০০ টোটো চলছে বারাসতে।

বাস মালিকদের দাবি, অটো-টোটোর দাপটে এই জেলার ৭২টি বাস রুটের মধ্যে সম্প্রতি ২৮টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বারাসত থেকে ব্যারাকপুর, জাগুলিয়া, কদম্বগাছি, দত্তপুকুর, মধ্যমগ্রামের মতো বিভিন্ন রুটেই বাস চালাতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে বাস মালিক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের জেলার সাধারণ সম্পাদক অলোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ নিয়ে জেলাশাসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।’’

ছোট রুটে অটো, ই-রিকশা চলে। কিন্তু তার জন্য দীর্ঘ বাস রুটে তেমন সমস্যা হয় না বলেই জানিয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে বসা হবে। নিজেদের মধ্যে যাতে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে।’’ বেআইনি গাড়ি প্রসঙ্গে তাপসবাবু বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ আসার পর থেকে সকলেই গাড়ি পাল্টে নিচ্ছেন। বাকিগুলোও ই-রিকশায় বদলে যাবে।’’ লাইসেন্স বিহীন গাড়ি আর চলবে না জানিয়েছেন তাপসবাবু।

Advertisement

জেলা সদর বারাসতে বিভিন্ন সরকারি অফিস-কাছারির পাশাপাশি আদালত, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে। এ ছাড়াও শহর দিয়ে গিয়েছে ৩৪ ও ৩৫ নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক। একটি ধরে কৃষ্ণনগর হয়ে উত্তরবঙ্গ যাওয়া যায়। অন্যটি ধরে বাংলাদেশ যাওয়ার পথ। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, ওই দুই জাতীয় সড়কে অটো কিংবা ই-রিকশার মতো ছোট যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সে সব নিয়ম মানেন না চালকেরা। অটো-টোটোর পিছনে ধীর গতিতে চলতে হয় দ্রুত গতির যানবাহনকে।

সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কেন জাতীয় সড়কে অটো-টোটো চলছে তার জবাবে বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে অটো-টোটো যাতে না ওঠে সে বিষয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। নির্দিষ্ট রুট তৈরি হচ্ছে, শীঘ্রই তা চালু হয়ে যাবে।’’

পরিবহণ দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘বেআইনি অটো-টোটো ধরতে প্রায়শ অভিযান হয়। ফলে এখন দলে দলে অটো-টোটো চালক এসে লাইসেন্স নিয়ে বৈধ গাড়ি কিনছেন। ওই সব যানবাহন যাতে ইচ্ছে মতো যে কোনও রুটে চলতে না পারে সেটাও দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.