E-Paper

ক্ষতিপূরণ এখনও মেলেনি মোচপোলে

২০২৩ সালের ২৭ অগস্ট সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মোচপোল পশ্চিমপাড়া। স্থানীয় বাসিন্দা কেরামত আলির বাড়িতে বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণ হয়।

ঋষি চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৩৩
দত্তপুকুর বিস্ফোরণের দুর্ঘটনাস্থল।

দত্তপুকুর বিস্ফোরণের দুর্ঘটনাস্থল। —ফাইল চিত্র।

বাজি বিস্ফোরণের পর প্রায় দেড় বছর হতে চলল। আতঙ্ক এখনও কাটেনি দত্তপুকুরের মোচপোলের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দাদের। তাঁরা ভুলতে পারেননি ন’জনের মৃত্যুর শোক। এ বার কল্যাণীতে বাজি বিস্ফোরণে চার জনের মৃত্যুতে তাঁদের প্রশ্ন, এর কি শেষ নেই?

২০২৩ সালের ২৭ অগস্ট সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মোচপোল পশ্চিমপাড়া। স্থানীয় বাসিন্দা কেরামত আলির বাড়িতে বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণ হয়। কেরামত ও তাঁর ছেলে-সহ ন’জন মারা যান। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে বাড়ির ছাদ ও টালির চাল, পাশের বাড়ির বাড়ির বারান্দায় ছিটকে গিয়ে পড়েছিল। দেড়শো মিটার দূরে উড়ে গিয়েছিল দেহাংশ ও ইটের টুকরো। সে দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা শিশু-সহ এক মহিলা দেওয়াল চাপা পড়ে বেহুঁশ হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন আশপাশের আরও কয়েক জন। বিস্ফোরণের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁরা পরে জামিন পান। বারাসত জেলা আদালতে মামলা চলছে।

অভিযোগ, এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি ক্ষতিগ্রস্তেরা। পুরোপুরি সুস্থ হননি আহত এক জন। পুলিশের নজরদারিতে এই এলাকায় বাজি তৈরি এখন পুরোপুরি বন্ধ। তবে, আশপাশের কিছু গ্রামে রমরমিয়ে নিষিদ্ধ বাজি তৈরির কারবার চলছে বলে অভিযোগ।

সে দিনের বিস্ফোরণে জখম হন সহিদুল আলি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দু’বছর পার হলেও ক্ষতিপূরণ পাইনি। প্রতিবাদ করেছিলাম, শোনেনি। এখানে কারখানা বন্ধ হলেও নারায়ণপুরে বাজি তৈরি হচ্ছে। সেখানেও ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তবে প্রকাশ্যে আসে না।’’ কানের পর্দা ফেটেছিল আশুরা বিবির। তিনি বলেন, ‘‘এখনও পুরোপুরি সুস্থ হইনি। আতঙ্ক তাড়া করে এখনও। যে কোনও শব্দ শুনলেই ভয় পাই। বাজি তৈরি যে কবে বন্ধ হবে?’’

ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিডিও রাজীব দত্তচৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া এখনও চালু হয়নি।

স্থানীয়দের দাবি, মোচপোল লাগোয়া দত্তপুকুরের নারায়ণপুর নামটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাজি কারবারের পুরনো ইতিহাস৷ সেখানে বাম আমল থেকেই কারবার চলছে। সেই সময় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বাজি তৈরি এবং বিক্রি সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে ছড়িয়ে পড়ে বেরুনান পুকুরিয়া, মোচপোল, কাঠুরিয়ায়। ‘বেআইনি’ বাজি কারবার বড় আকার নিয়েছে গত দেড় দশকে। এলাকার বহু বাগান ও বাড়িতে তৈরি হয় নানা রকম বাজি।

এ প্রসঙ্গে বারাসত জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নজরদারি তো চলছে। তেমন কিছু হলে ধরা পড়বে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dattapukur Blast

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy