Advertisement
E-Paper

নিষেধাজ্ঞা না মেনে গভীর জঙ্গলে আনাগোনা মৎস্যজীবীদের, বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা

নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বহু মানুষ। তবে তাঁদের মাছ ধরার এলাকা নির্দিষ্ট করা রয়েছে। জঙ্গলের গভীরে বা ‘কোর’ এলাকায় মাছ ধরতে বা অন্য কোনও কারণে ঢোকা নিষিদ্ধ।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৮
নজরদারি: এ পথেই প্রবেশ জঙ্গলের নিষিদ্ধ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

নজরদারি: এ পথেই প্রবেশ জঙ্গলের নিষিদ্ধ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সুন্দরবনের গভীরে মৎস্যজীবীদের আসা-যাওয়া চলছেই। সম্প্রতি জঙ্গলের ‘কোর’ এলাকায় মৎস্যজীবীদের আনাগোনার একাধিক প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি বন দফতরের। বার বার সতর্ক করার পরেও নিয়ম ভেঙে জঙ্গলে ঢোকায় মৎস্যজীবীদের একাংশের উপরে ক্ষুব্ধ বনকর্তারা। তাঁদের মতে, এতে মৎস্যজীবীদের প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ছে।

সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বহু মানুষ। তবে তাঁদের মাছ ধরার এলাকা নির্দিষ্ট করা রয়েছে। জঙ্গলের গভীরে বা ‘কোর’ এলাকায় মাছ ধরতে বা অন্য কোনও কারণে ঢোকা নিষিদ্ধ। কিন্তু অভিযোগ, বেশি মাছ-কাঁকড়ার লোভে অনেক মৎস্যজীবীই নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে পড়ছেন। গত কয়েক বছরে ‘কোর’ এলাকায় ঢুকে বাঘের হামলার মুখে পড়ে প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে।

বন দফতরের তরফে জঙ্গলের ‘কোর’ এলাকার সীমানাগুলি নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও সেখানে বিপদ সঙ্কেতও ঝুলিয়ে দিয়েছেন বনকর্মীরা। কিন্তু সেই নাইলনের জাল টপকেই মৎস্যজীবীরা জঙ্গলে ঢুকছেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি বন কর্মীরা টহলদারির সময়ে দেখেন সুন্দরবনের আজমলমারি ১, ২, পিরখালি জঙ্গলের একাধিক জায়গায় নাইলনের জাল ছেঁড়া বা সরানো রয়েছে। ওই অংশ দিয়েই মৎস্যজীবীরা জঙ্গলে ঢুকেছেন বলে বুঝতে পারেন তাঁরা।

সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “বন দফতরের তরফে নিয়মিত এলাকায় টহলদারি হয়। কিন্তু বেশিরভাগ মৎস্যজীবীই দিনের আলো ভাল করে ফোটার আগেই জাল কেটে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়ছেন। এতে বিপদেও পড়ছেন অনেকে। অনেক সময়ে এঁদের ধরে জরিমানা করা হয়। সতর্কও করা হয়। কিন্তু বেশিরভাগই কথা শোনেন না।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের বিভাগীয় বন আধিকারিক মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “কিছু মৎস্যজীবী ক্রমাগত এই কাজ করছেন। নাইলনের জাল কেটে জঙ্গলের মধ্যে বাঘেদের ডেরায় ঢুকে পড়ছেন। বার বার বলার পরেও এরা নিজেদের ভালটা বুঝতে চাইছেন না। আর দুর্ঘটনা ঘটলেই বন দফতরকে দোষ দিচ্ছেন।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, নদীর তুলনায় জঙ্গলের গভীরে খাঁড়িগুলিতেই বেশি মাছ-কাঁকড়া পাওয়া যায়। বিশেষ করে খাঁড়িগুলিতে ভাল কাঁকড়া মেলে। কাঁকড়ার বাজারদর চড়া। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও ‘কোর’ এলাকায় ঢোকার প্রবণতা আটকানো যাচ্ছে না।

কুমিরমারির বাসিন্দা অজয় সর্দার বলেন, “জানি জঙ্গলে বাঘ আছে, বিপদ ঘটতে পারে। কিন্তু জঙ্গলের গভীরে না গেলে কাঁকড়া পাব কোথায়? কাঁকড়া ধরতে পারলে তবেই তো সংসার চলবে, ছেলেমেয়ের মুখে দু’টো ভাত তুলে দিতে পারব!”

Sunderbans Fishermen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy