সাগরের পথে। ছবি: পিটিআই।
দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য ভাঙতে বসেছে এ বার গঙ্গাসাগর মেলায়।
মেলার সময় ছ’দিনের জন্য যে অস্থায়ী আদালত বসত মেলা প্রাঙ্গণে, তা চালু করার নির্দেশ সোমবার রাত পর্যন্ত আসেনি। মঙ্গলবার থেকেই সাগরে অস্থায়ী আদালতে একজন বিচারক, ক্লার্ক এবং আদালতকর্মীদের বসার কথা। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেলাশাসকের সুপারিশে বসে আদালত। কিন্তু এ বার তেমন কোনও সুপারিশ পাঠানোই হয়নি জেলা বিচারকের কাছে।
সূত্রের খবর, জেলা পুলিশের একটি অংশ মেলা চত্বরে আদালত চালানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে বলেই এ বার মেলায় বসছে না আদালত। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ মহলের সঙ্গে আইনজীবীদের একাংশের মনোমালিন্য তৈরি হয়েছে।
মেলা চত্বরে ওই অস্থায়ী আদালতে চুরি-ছিনতাই, থেকে শুরু করে মদ খেয়ে ঝামেলার মতো নানা ছোটখাট অপরাধ সঙ্গে সঙ্গে সামাল দেওয়া হতো। একজন বিচারক বা ম্যাজিস্ট্রেট থাকতেন। তৈরি হতো অস্থায়ী লকআপ। মেলা চলাকালীন প্রায় সাড়ে তিনশো মামলা হতো ওই আদালতে, জানাচ্ছেন আইনজীবীদের একটি অংশ।
কাকদ্বীপ আদালত বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবপ্রকাশ জানা বলেন, ‘‘আদালত না বসলে সাধারণ মানুষের হয়রানি কতটা বাড়বে, তা ধারণার বাইরে। মেলায় নানা রকমের অপরাধ হলে, সেখানেই তাদের গ্রেফতার করে ওই আদালতে তোলা যেত। কাউকে গ্রেফতার করে নদী পেরিয়ে কাকদ্বীপ আদালতে নিয়ে আসা ওই ভিড়ের মধ্যে প্রচণ্ড ঝামেলার।’’ তা ছাড়া, বিচারপ্রার্থীর পরিবার ভিন রাজ্যের হলে সে ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন আইনজীবীরা। আখেরে নিচু তলার পুলিশকর্মীরাও সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মূলত চুরি এবং মদ খেয়ে ঝামেলার মামলাই বেশি হতো মেলা চলাকালীন। কিন্তু আইনজীবীদের সওয়ালে অথবা জরিমানা দিয়ে জামিন পেয়ে যেত অপরাধীরা। আর একবার ছাড়া পেয়ে ফের একই অপরাধ ঘটাতো। কিন্তু বার বার একই অপরাধীকে ধরা পুলিশের পক্ষে প্রায় অসম্ভব বলে জানাচ্ছে ওই কর্তাদের অনেকে। মেলা প্রাঙ্গণ থেকে মামলা সরিয়ে কাকদ্বীপ আদালতে নিয়ে গেলে মেলায় এ ধরনের অপরাধের উপরে কিছুটা লাগাম টানা যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
জেলাশাসক বিপি সালিম বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার বলতে পারবেন কী হয়েছে।’’ তবে এই সিদ্ধান্তে জেলা পুলিশের কোনও সুপারিশের ব্যাপার নেই বলেই দাবি করছেন জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘জেলা বিচারকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কেন আদালত বসছে না, আমার জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy