Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নাবালিকাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের নালিশ বনগাঁয়

মোবাইলের ও পাশে বোনের চিৎকার শুনে খুঁজতে বেরোলেন দাদা

পরিচিত কিশোরীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এলাকারই এক যুবকের বিরুদ্ধে।শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার কালুপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবকের নাম সঞ্জয় মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৬ ০৬:৩৪
Share: Save:

পরিচিত কিশোরীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এলাকারই এক যুবকের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার কালুপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবকের নাম সঞ্জয় মণ্ডল। তার সঙ্গী সুব্রত খাঁ ওরফে ভোলার নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ ওই ছাত্রীর অভিযোগ ভিডিওগ্রাফিও করেছে। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ছাত্রীটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে।

তবে শনিবার রাত পর্যন্ত ধরা পড়েনি কেউ। গোটা ঘটনায় ফুঁসছে গ্রামের লোক। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়ের নেতৃত্বে পুলিশ গ্রামে গিয়েছিল শনিবার। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তল্লাশি চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ‘পকসো’ আইনে ও ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। বারাসত আদালতে মেয়েটির গোপন জবানবন্দি দেওয়ার ব্যবস্থা করছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর সঙ্গে সঞ্জয়ের পরিচয় ছিল। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে আলাপ হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় পাশের গ্রামের এক বান্ধবীর বাড়ি থেকে গল্প করে ফিরছিল দু’টি মেয়ে। মোটরবাইক নিয়ে হাজির হয় সঞ্জয়। ‘কথা আছে’ বলে মেয়েটিকে ডেকে নেয় সঞ্জয়। মূল রাস্তা থেকে প্রায় একশো মিটার ভিতরে খেতের দিকে চলে যায় তারা। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মেয়েটির বান্ধবী ফিরে যায়।

এলাকাটি বেশ অন্ধকার। অভিযোগ, সঞ্জয় তাকে আলের পাশে নিয়ে যায়। সেখানেই ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। পুলিশকে মেয়েটি জানিয়েছে, প্রবল ভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সে। হাত জোড় করে কাকুতি-মিনতি করে। কান্নাকাটি শুরু করে। কিন্তু সে সব তখন আর কানে তোলেনি সঞ্জয়ের।

ছাত্রীটির চিৎকার কানে যায় সুব্রতর। অভিযোগ, সে প্রতিবাদ করা তো দূর, বরং এগিয়ে এসে মেয়েটিকে একটি চড় মারে। টানাহ্যাঁচড়াও করে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ে বাড়ি আসছে না দেখে পরিবারের সদস্যেরা খোঁজাখুজি শুরু করেন। ছাত্রীটির মোবাইলে ফোন করছিলেন তার দাদা। কিন্তু সঞ্জয় বার বার ফোন কেটে দিচ্ছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, একটা সময় সঞ্জয়ের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে নিজের পকেটে রাখে মেয়েটি। চাপ পড়ে একবার ফোন ‘রিসিভ’ হয়ে যায়। তখনই বোনের চিৎকার শুনতে পান দাদা। বোনকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন তিনি। গ্রামের লোকজন, পরিবার-পরিজনও খোঁজাখুঁজি শুরু করে। মাঠের কাছাকাছি এলেই পালিয়ে যায় অভিযুক্তেরা।

মেয়েটির দাদার কথায়, ‘‘বার বার ফোন কেটে যাওয়ায় চিন্তা হচ্ছিল। তারপরে যখন এক সময়ে ফোনটা ধরল, তখন ও পাশ থেকে শুনি বোনের চিৎকার। বুঝতে পারি, বিপদে পড়েছে ও। সঙ্গে সঙ্গে আমরা খুঁজতে বেরিয়ে পড়ি।’’ শনিবার বনগাঁ থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে মেয়ের মা বলেন, ‘‘মেয়ের যারা এমন সর্বনাশ করল, তাদের কঠোরতম শাস্তি চাই।’’

গ্রামবাসীদের দাবি, সঞ্জয় এবং তার সঙ্গী সাত-আটজন যুবক এলাকায় মোটরবাইক নিয়ে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়ায়। দলের মধ্যে একজনের গাড়িও আছে। যা নিয়ে এলাকায় ‘দাদাগিরি’ শুরু করেছে তারা। মদ্যপ অবস্থায় হুজ্জুত করে।

সঞ্জয়ের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, সম্প্রতি হাতুড়ে চিকিৎসা শিখছিল সে। কিন্তু ‘অসৎ সংসর্গে’ পড়ে তার মাথা বিগড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Molest Youth Police Phone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE