Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

চোঙার আওয়াজে তিতিবিরক্ত হাবড়া

বাসিন্দারা জানালেন, শীতের শুরু থেকে শহরে শুরু হয়েছে মাইকের তাণ্ডব। যা এখনও চলছে।

সারি-সারি: হাবড়ায় মাইক।  ছবি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি

সারি-সারি: হাবড়ায় মাইক। ছবি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৬
Share: Save:

মাইকের দাপটে নাভিশ্বাস উঠেছে হাবড়ার মানুষেরও।

বাসিন্দারা জানালেন, শীতের শুরু থেকে শহরে শুরু হয়েছে মাইকের তাণ্ডব। যা এখনও চলছে। অথচ সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। সে দিকে ভ্রূক্ষেপ নেই কারও। যশোর রোড সংলগ্ন এলাকায় হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। মাইকের আওয়াজ পৌঁছে যায় ওয়ার্ডেও। রোগীর আত্নীয়দের বক্তব্য, টানা শব্দে বহু রোগী আরও অসুস্থ বোধ করেন। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেলেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। কারণ তাঁর বাড়ির কাছেই হয় তো মাইক বাজছে। সকলেই উচিত নিয়ন্ত্রিত মাইক বাজানো। শব্দ দূষণের ফলে ডিপ্রেশন, আলসার, এমনকী মানসিক রোগও দেখা দিতে পারে। মানুষের চিন্তা-ভাবনা করবার ক্ষমতাও কমে যায়।’’ শহরের রাস্তায় বের হলেই চোঙার কান ফাটানো আওয়াজে নাজেহাল বাসিন্দারা। শব্দ তাণ্ডবের প্রতিবাদে দিন কয়েক আগে সিপিএমের হাবড়া শহর এরিয়া কমিটির তরফে থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী বাবুল সরকার বলেন, ‘‘পথে বেরিয়ে ফোনে কথা বলা যায় না। ফোন এলেও রিংটোন শুনতে পাই না। এমনকী, পিছনে গাড়ি এসে হর্ন দিলেও শোনা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনা ঘটে। দিনের পর দিন এমন চলছে।’’

ধর্মীয়, রাজনৈতিক, ক্লাব, সাংস্কৃতিক সংগঠন, এমনকী সরকারি অনুষ্ঠানের জন্যেও শহরের রাস্তায় বাঁধা হচ্ছে চোঙা। এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোরের কথায়, ‘‘ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করলেও মাইকের আওয়াজ ঠেকানো যায় না। এতটাই জোরে বাজে চোঙাগুলি। বই নিয়ে বসেও পড়ায় মন দিতে পারি না।’’

দিনভর শব্দের তাণ্ডবে প্রবীণ মানুষেরা অনেকে অসুস্থ বোধ করেন। পথ দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে বলেও জানালেন অনেকে। কারণ, গাড়ির হর্ন শুনতে পান না পথচারীরা। সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরীর অভিযোগ, এখানে শব্দ দূষণ নয়, মাইকের তাণ্ডব চলছে। দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের মদতেই চলে এ সব। কোনও নজরদারি নেই।

পুরবোর্ড বর্তমানে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে আছেন প্রশাসন তাপস বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে মাইক বাজানোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ করার জন্য।’’ অতীতে শব্দের তাণ্ডব রুখতে পদক্ষেপ করা হলেও তা খুব কার্যকর হয়নি বলে মানছেন বিদায়ী পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসককে বলব, উচ্চস্বরে মাইক বাজানোর বিরুদ্ধে

পদক্ষেপ করতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Habra Noise Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE