Advertisement
E-Paper

একসঙ্গে ইদের সিমুই বানান মমতাজ, রুমারা

উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি, কাঁকিনাড়া, বারাসত, গোলাবাড়ি, দেগঙ্গা ও বসিরহাটের একাধিক কারখানায় লাচ্ছা ও সিমুই তৈরিতে হাতে হাত লাগিয়েছেন মুসলিম ও হিন্দু মহিলারা।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০২:১১
জোরকদমে: ইদের আগে সিমুই তৈরিতে ব্যস্ত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার মহিলারা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

জোরকদমে: ইদের আগে সিমুই তৈরিতে ব্যস্ত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার মহিলারা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অধীর অপেক্ষা শেষ হতে বাকি মাত্র এক দিন। গত এক মাস ধরে রোজা রাখার পরে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের খুশির ইদ পালন হবে দেশ জুড়ে। ইদের সকালে নমাজের ময়দানে জড়ো হয়ে দোয়া বা প্রার্থনায় সামিল হবেন তাঁরা। নমাজ-শেষে খুশি বিনিময়ের পাশাপাশি চলবে লাচ্ছা ও সিমুই দিয়ে মিষ্টিমুখ।

সেই লাচ্ছা ও সিমুই বাজারে জোগান দিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কারখানাগুলিতে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি, কাঁকিনাড়া, বারাসত, গোলাবাড়ি, দেগঙ্গা ও বসিরহাটের একাধিক কারখানায় লাচ্ছা ও সিমুই তৈরিতে হাতে হাত লাগিয়েছেন মুসলিম ও হিন্দু মহিলারা। ধর্মের আগল ভেঙে এমন কাজ করতে পেরে রীতিমতো উৎসাহী তাঁরা। কয়েক বছর হল, ওই এলাকায় তৈরি লাচ্ছা ও সিমুই নাম কেড়েছে সারা দেশে। সুদূর বিহার থেকে এসে শাসনের গোলাবাড়ি, বসিরহাটের খোলাপোতায় লাচ্ছা তৈরি শুরু করেছেন কারিগরেরা। এর পাশাপাশি দেগঙ্গা, বারাসত, আমডাঙার ছোট-বড় কারখানায় চলছে সিমুই তৈরির কাজ।

বেড়াচাঁপার গোদামোড় এলাকায় একটি কারখানায় দেখা গেল, মমতাজ, সাকিনা বিবিদের সঙ্গেই সোৎসাহে সিমুই তৈরি করছেন রুমা মণ্ডল, অর্চনা বিশ্বাস, ঝুমা কাহারেরা। সিমুই কেটে, প্যাকেটে ভর্তি করার কাজে এখন খুব চাপ। ইতিমধ্যেই বাজারে চলে যেতে শুরু করেছে এই সিমুই। কারখানার মালিক মহিফুল ইসলাম বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন বাজার তো বটেই, কলকাতার বাজারেও আমাদের সিমুইয়ের বিপুল চাহিদা। এর জন্য তিন মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। এই কারখানায় দিনে ৩০০ টাকা মজুরিতে রোজ ৪০ জন মহিলা কাজ করেন।’’

ইমদাদুল মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ী জানান, যন্ত্রের সাহায্যে ৫০ কেজি ময়দার সঙ্গে ১৩ লিটার জল মিশিয়ে সুতোর মতো কাঁচা সিমুই বেরোয়। সেগুলিকে একটি লাঠির উপরে পরপর সাজিয়ে রাখা হয় বন্ধ ঘরের হিট চেম্বারে। এর পরে কয়লার আগুনের তাপ দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয় সেই কাঁচা সিমুই। তার পরে প্যাকেট বন্দি করে পাঠানো হয় বিভিন্ন বাজারে। এক কিলোগ্রাম সিমুই তৈরি করতে খরচ পড়ে ২৯ টাকার মতো। পাইকারি বাজারে তা ৩২ টাকায় বিক্রির পরে সাধারণ মানুষ কেনেন ৪০ টাকা করে। মাঝখানে ৮ টাকা মুনাফা মেলে খুচরো ব্যবসায়ীদের।

অন্য দিকে, শাসনের গোলাবাড়ি এলাকায় লাচ্ছা তৈরির কারখানাতেও এখন বিরাম নেই বিহার থেকে আসা কারিগরদের। নিজের রাজ্য ছেড়ে এই সময়ে রোজগারের আশায় বাংলায় আসেন দীপক সাউ, রামশরণ তিওয়ারির মতো অনেকে। উপার্জন করে ইদের আগেই বাড়ি ফিরে খুশিতে মেতে ওঠেন তাঁরাও। লাচ্ছা তৈরির এক কারখানার মালিক মনসুর আলি জানালেন, ইদের চাহিদা সামাল দিতে তাঁরা অস্থায়ী কারখানা বানিয়ে লাচ্ছা তৈরি করেন।তার পরে রাজ্যের বাজারে তা জোগান দেন।

Eid Semui Women
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy