Advertisement
E-Paper

স্মৃতি বিজড়িত বটগাছ সংরক্ষণের ভাবনা হাসনাবাদে

গাছকে ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে গাঁয়ের মানুষের। আর বহু কাহিনি। বিশাল বটগাছের মাঝে এক টুকরো ফাঁকা জায়গায় পীর গোরাচাঁদের থান।

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১০
আজও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই বটগাছ। নিজস্ব চিত্র।

আজও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই বটগাছ। নিজস্ব চিত্র।

সঠিক বয়সটা জানা নেই কারও। বাপ-ঠাকুর্দার আমল পেরিয়ে আরও প্রাচীন, এটুকু সকলেই বোঝেন। জন্মসন জানা না থাকলেও খাতির তার দেদার। ৬ বিঘা জমির উপরে শাখা-প্রশাখা ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে আজও একই ভাবে দাঁড়িয়ে হাসনাবাদের খড়ুর গ্রামের বটগাছটি।

ইছামতী নদী পেরিয়ে বরুণহাটের দিকে যেতে ডান দিকে পড়বে খড়ুর গ্রাম। প্রাচীন এই গাছটির জন্য সুন্দরবন এলাকার এই গ্রামকে এক ডাকে চেনেন আশেপাশের মানুষজন।

গাছকে ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে গাঁয়ের মানুষের। আর বহু কাহিনি। বিশাল বটগাছের মাঝে এক টুকরো ফাঁকা জায়গায় পীর গোরাচাঁদের থান। লোক মুখে ফেরে, হাজার বছর আগে পিরজাদা এসেছিলেন এখানে। এই বটগাছের নীচে কাটিয়েছিলেন কিছু দিন। সেই থেকেই থানের জন্ম।

খড়ুর-সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের বিশ্বাস, অসুখে-বিসুখে, বিপদে-আপদে পিরবাবার থানে মানত করলে মুশকিল আসান। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মানেন সে কথা। বটের ডাল কাটলে বিপদ নিশ্চিত, এই বিশ্বাসটাও আছে। ফলে ডালপালা দালানে ঢুকে পড়লেও তা কাটেন না কেউ। ফলে দিন দিন ঝুরি ফেলে কলেবর বাড়িয়েই চলেছে গাছ। বাসিন্দারা গাছের ধার ছেড়ে ক্রমে পিছিয়ে ঘর বাঁধছেন। গ্রামের এই গাছটি নিয়ে গর্বের সীমা নেই খড়ুরের মানুষের।

কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চিন্তা জাঁকিয়ে বসেছে তাঁদের মধ্যে। প্রাচীন গাছের খোঁজ পেয়ে এখন শহর থেকেও মানুষজন আসেন। চড়ুইভাতি করে অনেকে। আগুনের তাপে গাছের ক্ষতি হচ্ছে।

গ্রামবাসীরা জানালেন, সিনেমার শ্যুটিংও হয় গাছের আশেপাশে। ছবির প্রয়োজনে লুকিয়ে ডালা কাটা হয়েছে, এমনও হয়েছে। দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞেরা এসে গাছের নাড়ি-নক্ষত্র জানতে চেয়েছেন। ছবি তুলে গিয়েছেন। বাসিন্দারা জানালেন, বিশেষজ্ঞেরা জানিয়ে গিয়েছেন, দেশে এমন গাছ খুব কমই আছে। এর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। কিন্তু প্রশাসনের তরফে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা না হওয়ায় ক্ষোভ আছে স্থানীয় মানুষের। সীমান্ত পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে গাছের ডাল কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। বটগাছের পাশে খড়ুর এফপি স্কুল। শিক্ষক মমতাজ আলির কথায়, ‘‘বটগাছের তলায় পীরবাবার থানে যেমন ইদের নামাজ পড়া হয়, তেমনই ফাল্গুন মাসে ধর্মসভা বসে। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। ছোট বাচ্চাদের খেলার সুন্দর জায়গাও এটা।’’

সংরক্ষণ প্রসঙ্গে বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি বলেন, ‘‘এত বড় একটা বটগাছ সংরক্ষণ সত্যি জরুরি। সংশ্লিষ্ট বিডিও-র সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। কী ভাবে ওই বটগাছের চারপাশে পাঁচিল দেওয়া যায়, ভিতরে বসার জায়গা করা যায়, তা দেখা হবে।’’

Banyan Tree Hasnabad Reservation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy