Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চায়ের দোকানে মদ, প্রতিবাদে সরব মহিলারা

চা বিক্রির আড়ালে চলছিল মদ বিক্রি— এর প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ালেন বসিরহাটের মাটিয়া থানার চকফারাসাতপুর গ্রামের মহিলারা। বুধবার রাতে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করা হয়।

বিক্ষোভ: মাটিয়ার গ্রামে। ছবি: নির্মল বসু

বিক্ষোভ: মাটিয়ার গ্রামে। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মাটিয়া শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

চা বিক্রির আড়ালে চলছিল মদ বিক্রি— এর প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ালেন বসিরহাটের মাটিয়া থানার চকফারাসাতপুর গ্রামের মহিলারা। বুধবার রাতে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রীকে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম অনিল মণ্ডল ও শিখা মণ্ডল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে এক সময়ে চোলাই তৈরি হত। অল্পবয়সী ছেলেরা চোলাই তৈরি এবং বিক্রির কারবারে জড়িয়ে পড়ে। রোজগারের টাকা চোলাইয়ের পিছনে উড়িয়ে দিত। বাড়িতে অশান্তি হত। স্ত্রী-সন্তানদের মারধর চলত। এলাকায় চুরি-ছিনতাইও বেড়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কথায় কথায় গ্রামে পুলিশ আসত। দুষ্কৃতীদের ধরে নিয়ে যেত। তা দেখে ছেলেমেয়েরা ভয় পেত। সন্ধ্যাবেলায় অশান্তির জন্য কচিকাঁচারা পড়তে পারত না। গ্রামের মানুষের চেষ্টাতেই চোলাইয়ের ঠেকগুলি বন্ধ হয়েছিল। পাঁচ বছর ধরে ওই গ্রামে আর কেউ চোলাই তৈরি করেন না। যখন শান্তি ফিরে এল, তখনই বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি করতে শুরু করল ওই দম্পতি। চাঁপাপুকুর রাস্তার পাশে চায়ের দোকানের নাম করে মদ বিক্রিও চলত বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় মহিলা সমিতির সদস্য-সহ গ্রামের বহু মানুষ স্থানীয় একটি ক্লাবে জড়ো হন। সেখানে বৈঠকের পরে সকলে ওই দোকানটিতে যায়। মদ বিক্রি বন্ধের জন্য ওই দম্পতিকে বারণ করা হয়। কিন্তু অনিল ও শিখার দাবি, লাইসেন্স নিয়ে মদের ব্যবসা চলছে। দোকান বন্ধ করা সম্ভব নয়। এরপরেই জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ভেঙে ফেলা হয় শতাধিক দেশি-বিদেশি মদের বোতল।

অঞ্জলি মণ্ডল, সবিতা মণ্ডল, শঙ্কর মণ্ডল, সুজিত মণ্ডল, পার্বতী মণ্ডলরা বলেন, ‘‘গ্রামে কয়েকটি পরিবারে চোলাই তৈরি এবং বিক্রি করে। তাদের জন্য গ্রামের বদনাম হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বাড়ে। শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য মদ বিক্রির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি।’’ সঞ্জয় মণ্ডল, মিতা মণ্ডল, বন্দনা মণ্ডল, সুমন সামন্ত, তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘বৈঠক করে গ্রামের মানুষ মদ বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। সে কথা জানানো সত্ত্বেও অনিল তার চায়ের দোকানে মদের ব্যবসা চালিয়েছে। দুষ্কৃতীদের ভয়ে রাতে ওর দোকানের পাশ দিয়ে যেতে ভয় পান মহিলারা। এ সব বন্ধ করতেই আমাদের প্রতিবাদ।’’ তাঁরা জানান, দোকান বন্ধের কথা বোঝাতে গেলে পাল্টা দুষ্কৃতী লেলিয়ে হুমকি দেওয়ায় চেষ্টা করেছিল অনিলরা।

গ্রামের মানুষের দাবি, মদের দোকানকে কেন্দ্র করে এলাকায় কয়েকটি জুয়ার ঠেক শুরু হয়েছে। অবিলম্বে মদের দোকান এবং জুয়া বন্ধ না হলে বড় আন্দোলনের পথে যাবেন তাঁরা। পুলিশ জানায়, তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Female Illegal Liqour Tea Shop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE