Advertisement
E-Paper

বাসের অভাবে ভোগান্তি রোগীরও

রোজকার মতো কাজে বেরিয়েছিলেন সঞ্জয় হালদার। কিন্তু টিকিট কাটাই তাঁর সার হল। ভিড় ঠেলে আর ট্রেনে ওঠা হল না। কাজেও যেতে পারলেন না সঞ্জয়বাবু। মুখ কাঁচুমাচু করে বাড়ি ফিরে গেলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৬ ০১:০৪
ভিড়ে উপচে পড়ছে ক্যানিং স্টেশন। ছবি: সামসুল হুদা।

ভিড়ে উপচে পড়ছে ক্যানিং স্টেশন। ছবি: সামসুল হুদা।

রোজকার মতো কাজে বেরিয়েছিলেন সঞ্জয় হালদার। কিন্তু টিকিট কাটাই তাঁর সার হল। ভিড় ঠেলে আর ট্রেনে ওঠা হল না। কাজেও যেতে পারলেন না সঞ্জয়বাবু। মুখ কাঁচুমাচু করে বাড়ি ফিরে গেলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে ক্যানিং স্টেশনে এসে বহু লোককেই বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে। ২১ জুলাই শাসকদলের ডাকা সমাবেশে যাওয়ার যাত্রীই এ দিন বেশি ছিল। ওই ভিড় ঠেলে অনেকেই এ দিন আর ট্রেনে উঠতে পারেননি। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘কী ভাবে যাব। তিনটে ট্রেন চোখের সামনে দিয়ে চলে গেল। এত ভিড় যে উঠতে পারলাম না। এই করতে করতে অফিসের সময়ও পেরিয়ে গেল।’’

এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে অনেকের মধ্যেই। এ দিন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ক্যানিং স্টেশনে যাত্রীদের বচসা বাধে। ধাক্কাধাক্কি হয়।

সড়কপথে যাতায়াতের সমস্যাও ছিল চরমে। সকাল থেকেই বাস, গাড়ি কম চলছে। এতে সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। বাস, ট্রেকার-সহ যাত্রিবাহী গাড়ি তুলে নেওয়ায় ভোগান্তির শিকার হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। মহকুমার বিভিন্ন সরকারি অফিসগুলিতে অন্য দিনের তুলনায় হাজিরা কিছুটা কম ছিল। হাতে সময় নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েও অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে, স্কুলে, কলেজে পৌঁছতে পারেননি।

ক্যানিঙের এক স্কুল শিক্ষিকা বলেন, ‘‘অন্য দিন কলকাতার বাড়ি থেকে সকাল ৮ টায় বেরিয়েও নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে পৌঁছই। কিন্তু এ দিন সকাল ৭টাতে বেরিয়েও পারিনি। যানজট এবং ঠিকমতো গাড়ি না পাওয়ায় স্কুলে আসতে বেশ সমস্যা হয়েছে।’’

ঝড়খালির বাসিন্দা তনিমা বিশ্বাস স্বামীকে নিয়েএসএসকেএমে আসছিলেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু ঝড়খালি থেকে ক্যানিঙে আসার জন্য একটি বাসও পাননি বলে জানালেন। অনেক কষ্টে অটো করে ক্যানিঙে আসতে হয়েছে। তারপরে ট্রেনে উঠতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। তনিমাদেবীর কথায়, ‘‘শেষমেশ চার ঘণ্টা পরে কলকাতায় পৌঁছতে পারলাম। অন্য দিন আড়াই ঘণ্টাতেই চলে যাই। খুব কষ্ট হয়েছে রাস্তায়।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমাবেশের জন্য মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট, বড় মিলিয়ে প্রায় ৭০০টি গাড়ি গিয়েছে। ক্যানিঙের গদখালি-বারুইপুর, ঝড়খালি- বারুইপুর, চুনোখালি-বারুইপুর-সহ বিভিন্ন রুটে প্রায় ৭২টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫টি বাস সমাবেশের জন্য রুট থেকে তুলে নেওয়া হয়।

ক্যানিঙের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি সুশীল সর্দার বলেন, ‘‘যাত্রীদের কথা ভেবেই রুট থেকে সব গাড়ি তুলে নেওয়া হয়নি। তাই তেমন কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় সকালে ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। প্রত্যেক স্টেশন থেকেই তৃণমূল কর্মীরা ব্যানার, পোস্টার নিয়ে ট্রেনে উঠেছেন। এ দিন অনেকেই বাদুড়ঝোলা হয়ে অফিস গিয়েছেন। জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ সংস্থার সরকারি সদস্য গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ সংস্থার অধীনে ১২০০টি বাস আছে। তার মধ্যে ৬০০টি বাস ধর্মতলার সমাবেশে গিয়েছিল।’’

শিল্পাঞ্চলে কোনও রুটের বাসই সে ভাবে চলেনি। ফলে সকালবেলা থেকেই ট্রেনে ভিড় দেখা গিয়েছে। এলাকায় রিকশা বেশি ভাড়ায় চলেছে। মালবাহী গাড়িগুলিও যাত্রিবাহি গাড়িতে পরিণত হয়েছিল। সরকারি অফিসের কাজকর্ম স্বাভাবিক ছিল। মহকুমা প্রশাসনিক দফতরে প্রায় ৮০ শতাংশ হাজিরা ছিল। অনেকে এ দিন অফিসের জন্য তাড়াতাড়ি বেরিয়েও ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেননি। স্কুল পড়ুয়াদের কম দেখা গিয়েছে।

Rally TMC Train Bus Patient
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy