ভাঙড়ে এই ভাবে জলাজমি মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
জলাভূমি, মেছোভেড়ি, পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠল মাটি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। ভাঙড় ২ ব্লকের বামনঘাটা, বেঁওতা ১, ২ পঞ্চায়েত এলাকার কুলবেড়িয়া, হাটগাছা, তাড়দহ, হাতিশালা-সহ আশপাশের এলাকায় প্রশাসনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জমির চরিত্র বদল না করে বেআইনি ভাবে জলাজমি ভরাট করে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শাসক দলের কিছু নেতার মদতেই রাতের অন্ধকারে গাড়ি গাড়ি মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে ওই সব জলাজমি। এর ফলে এলাকার বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে বলে মত পরিবেশপ্রেমীদের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড় ২ ব্লকের বামনঘাটা, বেঁওতা ১, ২ পঞ্চায়েত এলাকা নিউটাউন-লাগোয়া হওয়ায় এই সব এলাকার জমির দাম আকাশছোঁয়া। এমনিতেই এই সব এলাকার অধিকাংশ জমি জলাভূমি বা ওয়েটল্যান্ড। কিছু আবার মৎস্য দফতরের অধীন মেছোভেড়ি এবং পুকুর। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ওয়েটল্যান্ড কোনও ভাবেই ভরাট করা যায় না। তা ছাড়া, পুকুর বা মেছোভেড়ি ভরাট করার ক্ষেত্রে জমির চরিত্র বদল করা প্রয়োজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ স্থানীয় মানুষের।
এলাকার বাসিন্দা সেলিম মোল্লা, পিন্টু মণ্ডলরা জানান, শাসক দলের বেশ কিছু নেতার মদতেই চলছে এই বেআইনি কাজ। গাবতলা, হাতিশালা এলাকায় সেচ দফতরের খাল ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। আবার হাতিশালা থেকে ভোজেরহাটের রাস্তার পাশে জলাভূমিও ভরাট করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার অভিযোগ, “এলাকার এক তৃণমূল নেতার মদতেই এ সব হচ্ছে। তিনি সরকারি জমি জবরদখল করে সেখানে দলীয় কার্যালয়ও তৈরি করেছেন।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই নেতা। এ বিষয়ে তৃণমূলের ভাঙড় বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, “দল এ ধরনের বেআইনি কাজ অনুমোদন করে না। যারা এ ধরনের বেআইনি ও সমাজবিরোধী কাজ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নজরে আসার পরেই আমি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।”
ভাঙড় ২ বিএলআরও আমিনুল ইসলাম বলেন, “কুলবেড়িয়া এলাকায় জলাজমি ভরাট নিয়ে মৎস্য দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে আমরা তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। এ ছাড়া, ওয়েটল্যান্ডের জমি ভরাট নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা রুজু হয়েছে। আমরা সেই রিপোর্টও জমা দিয়েছি। কোথাও এ ধরনের কোনও অভিযোগ থাকলে আমরা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
বারুইপুরের মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিডিওকে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছি। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy