E-Paper

ট্যাঙ্ক তৈরি হয়ে পড়ে আছে, শুরু হল না জল সরবরাহ

বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে থাকলেও, জলজীবন প্রকল্পের টাকা পেয়ে গিয়েছে রাজ্য। কিন্তু তারপরেও কি গ্রামে গ্রামে জল সরবরাহের কাজে গতি এসেছে? পঞ্চায়েত ভোটের আগে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৮:৪১
এই ট্যাঙ্ক কাজে লাগবে কবে, প্রশ্ম। নিজস্ব চিত্র

এই ট্যাঙ্ক কাজে লাগবে কবে, প্রশ্ম। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

এলাকায় জল সরবরাহের জন্য কাজ শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। একাধিক জল সঞ্চয়ের জলাধারও (ওভারহেড ট্যাঙ্ক) তৈরি হয়। কিন্তু তৈরি হয়েও প্রায় বছর তিনেক ধরে পড়ে রয়েছে সেই ট্যাঙ্ক। অভিযোগ, এত দিনেও শেষ হয়নি পাইপলাইন বসানোর কাজ। শুরু হয়নি জল সরবরাহ। এমনই পরিস্থিতি মন্দিরবাজারে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গরমে জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

ব্লকে ১০টি পঞ্চায়েতে ৩ লক্ষের বেশি মানুষের বসবাস। স্থানীয় সূত্রের খবর, অধিকাংশ এলাকাতেই পাইপলাইনে জল সরবরাহ শুরু হয়নি। এলাকাজুড়ে জল সরবরাহের জন্য তিন বছর আগে আচনা পঞ্চায়েতের কাছে, বৃন্দাবনপুর মোড়ে, মৌজপুর এবং দয়রামপুর গ্রামে চারটি জলের ট্যাঙ্ক তৈরি হয়। কিন্তু অভিযোগ, ট্যাঙ্ক তৈরি হলেও পাইপলাইন বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে যায় মাঝপথে। ফলে পানীয় জলের জন্য এখনও নলকূপই ভরসা স্থানীয় মানুষের। পুকুরের জল শুকিয়ে যাওয়ায় অন্যান্য কাজেও সেই নলকূপের জলই ব্যবহার করতে হচ্ছে। এ দিকে, গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ায় কোথাও কোথাও নলকূপেও ঠিকমতো জল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে সমস্যা বেড়েছে। খাওয়ার জল আনতে অনেককে যেতে হচ্ছে দূরের গ্রামে।

এলাকার লোকজন জানালেন, বৃন্দাবনপুর, রামনাথপুর, ঘাটেশ্বর, মন্দিরবাজার ও লক্ষ্মীকান্তপুরের কিছু এলাকায় কয়েক বছর আগে সাবমার্সিবেল পাম্প বসিয়ে জল সরবরাহ শুরু হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় বেশ কয়েক জায়গায় পাম্প অকেজো হয়ে গিয়েছে। এ দিকে, এলাকায় পাইপলাইন বসানোর কাজও ঠিক মতো হচ্ছে না। ফলে কবে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছবে বুঝতে পারছেন না কেউ। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন হালদার বলেন, “বাড়ির কাছাকাছি ট্যাঙ্ক তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। অথচ, জলের জন্য হাহাকার চলছে।”

মন্দিরবাজারের সিপিএম নেতা সজল চক্রবর্তীর অভিযোগ, “এত দিনেও পাইপ লাইনের বসানোর কাজ হল না। গরম পড়তেই সারা ব্লক জুড়ে জলের হাহাকার শুরু হয়েছে।” বিজেপি নেতা অশোক পুরকাইতের অভিযোগ, “জল জীবন মিশন প্রকল্পের টাকায় ঠিকঠাক কাজ হয়নি। ফলে গ্রামে পাইপলাইনের ‌কাজ সে ভাবে হচ্ছে না। এ দিকে, জলের অভাবে মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন। আদৌ পাইপ লাইনের কাজ শেষ হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।”

ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, ঘাটেশ্বর পঞ্চায়েতে আখড়াবেড়িয়ায় মাটির নীচে জলাধার তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে তাতে জল পৌঁছে গিয়েছে। পাইপলাইন বসানোর পাশাপাশি আরও তিনটি ট্যাঙ্ক তৈরি হবে। মন্দিরবাজারের বিডিও কৌশিক সমাদ্দার বলেন, “বাড়িতে বাড়িতে জল সরবরাহের জন্য ইতিমধ্যে গঙ্গার জল পরিস্রুত করে এলাকায় গ্রাউন্ড রিজার্ভারে পৌঁছে গিয়েছে। ৭টি ওভারহেড ট্যাঙ্ক তৈরি হবে। গ্রাউন্ড রিজার্ভার থেকে ওই ট্যাঙ্কগুলিতে জল যাবে। সেখান থেকে বাড়িতে বাড়িতে জল সরবরাহ হবে। পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ওই কাজ শেষ হলে জল সরবরাহও শুরু হবে।”

মন্দিরবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তপন পুরকাইত বলেন, “এলাকায় জলের সঙ্কট রয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় গ্রামে প্রায়ই নলকূপ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে সারানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাইপলাইনের কাজ শেষ হলে বাড়িতে বাড়িতে জল পৌঁছে যাবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mandir Bazar water tank

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy