Advertisement
E-Paper

ভোট-প্রচারে জমে উঠেছে ছড়ার লড়াই 

বিজেপির তরফে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে— ‘‘দিদির পায়ে হাওয়াই চটি/ ভায়েরা সব কোটিপতি।’’

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৩৩
ছড়ার-ছন্দে: লোকসভা ভোটের দেওয়াল লিখনে ছড়ার ব্যবহার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ছড়ার-ছন্দে: লোকসভা ভোটের দেওয়াল লিখনে ছড়ার ব্যবহার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

‘‘ভাঁওতাবাজির পনেরো লাখ/ চৌকিদারের মন কি বাত.../ এই বিজেপি যাক নিপাত/ যাক নিপাত যাক নিপাত’’— এ ভাবেই দেওয়ালে ছড়া লিখে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল।

ছড়া-যুদ্ধে পিছিয়ে নেই বিজেপি বা বামেরাও। ছড়ার মাধ্যমেই তৃণমূলের প্রতি আক্রমণ শানাচ্ছে তারা। গাইঘাটা এলাকায় ডিওয়াইএফের তরফে ছড়ার মাধ্যমে তৃণমূল-বিজেপিকে এক সঙ্গে আক্রমণ করে দেওয়াল জুড়ে লেখা হয়েছে—‘‘মিলে মিশে লুটে খায়/ বুঝে গেছে জনতা/ ও পাড়ার মোদী আর এ পাড়ার মমতা।’’

বিজেপির তরফে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে— ‘‘দিদির পায়ে হাওয়াই চটি/ ভায়েরা সব কোটিপতি।’’ গোপালনগর এলাকায় একটি দেওয়ালে দেখা গেল ‘‘আর নয় তৃণমূল/ এ বার ভোটে পদ্মফুল।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ রাজ্যের ভোট প্রচারে ছড়ার ব্যবহার নতুন নয়। দাদাঠাকুরের ভোটের গান তো বিখ্যাত হয়ে আছে। সাম্প্রতিক অতীতেও ছড়ার মাধ্যমে যুযুধান প্রতিপক্ষেরা একে অপরকে বিঁধেছেন— এমন উদাহরণ প্রচুর। তবে একেবারে সাম্প্রতিক ভোটগুলিতে ছড়ার ব্যবহার অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এ বার আবার লোকসভা ভোটে ডান-বাম সব রাজনৈতিক দলকেই দেওয়াল লিখন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়া ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে।

রাজনীতির অঙ্গনে ছড়ার ব্যবহার আগে কেমন ছিল?

প্রবীণেরা স্মৃতি হাতড়ে জানালেন, ১৯৭৭ সালের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়। ইন্দিরা গাঁধীও নিজের আসনে হেরেছিলেন। তিনি কংগ্রেস (আই) তৈরি করেন। সেই দলের প্রতীক ছিল ‘হাত’। পরবর্তী সময়ে হাত প্রতীককে কটাক্ষ করে বামেদের তৈরি ছড়া বিখ্যাত হয়ে রয়েছে— ‘‘ঝোঁকের মাথায় নিলি হাত/ ভোটে হবি কুপোকাত।’’ ১৯৬৭ সালে কংগ্রেস ও সিপিআইয়ের মধ্যে জোট হয়েছিল। সিপিএম লিখেছিল, ‘‘দিল্লি থেকে এল গাই/ সঙ্গে বাছুর সিপিআই।’’

এ বার কেন ছড়ার উপরে জোর দিল রাজনৈতিক দলগুলি?

সব রাজনৈতিক দলেরই বক্তব্য, নিরক্ষর মানুষও ছড়ার ছন্দে আমোদিত হয়ে গড়গড়িয়ে আওড়ে যান। গ্রামে আজও ‘ঘুমপাড়ানি’ ছড়ার প্রচলন রয়েছে। ছড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরা যায়। ছড়া ভাল হলে তা মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই প্রতীকে ভোট দিন— এমন দেওয়াল লিখন এখন আর মানুষকে আকৃষ্ট করে না। বরং ছড়ার মাধ্যমে স্লোগান লেখা হলে মানুষ তা পড়েন। ভাল লাগলে আলোচনা করেন।’’

তৃণমূলের জেলার সাধারণ সম্পাদক গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেকে চৌকিদার বলছেন, এমন কথা অতীতে কেউ শোনেনি। বাস্তবে তিনি দেশের ধনসম্পদ রক্ষা করতে পারেননি। তাই ‘চৌকিদার’ শব্দ নিয়ে ছড়া লিখলে মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলা যাবে। সে কারণেই আমরা ছড়ায় জোর দিয়েছি।’’ ছড়া নিয়ে কী বলছে সিপিএম? দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘ছড়া মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলে বেশি। তাই ছড়ার উপরে জোর দিয়েছি।’’ভোটে ছড়ার ব্যবহার নিয়ে কবি বিভাস রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভোটের ছড়া বাংলাদেশে বেশ প্রচলিত। ছড়া মানুষের মধ্যে দ্রুত প্রভাব ফেলে। ভোট নিয়ে নানা নোংরামি, ব্যক্তিগত আক্রমণের মধ্যে এটা একটা সুস্থ সংস্কৃতির লক্ষণ।’’

Bangaon Lok Sabha Election 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy