স্বনির্ভর: নিজেদের কাজে ব্যস্ত সুরভি, কল্পনারা। নিজস্ব চিত্র
এঁদের কেউ যাদবপুর কেউ গড়িয়া, কেউ বাঘাযতীন এলাকায় বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে ঘুরে গৃহ সহায়িকার কাজ করতেন। কিন্তু টানা লকডাউন ও ট্রেন বন্ধের ফলে কাজে যোগ দিতে না পারায় সেই কাজ হারিয়েছেন। হঠাৎ রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা, দিঘিরপাড়, শ্মশানঘাট পাড়ার বহু মহিলা। তবে তাতে দমে যাননি তাঁরা। বিকল্প আয়ের খোঁজে এদের অনেকেই এখন বাড়িতেই শীতকালীন মিষ্টি, লাড্ডু, গজা তৈরি করছেন।
বাঘাযতীনে চারটি বাড়িতে গৃহ সহায়িকার কাজ করতেন ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটার বাসিন্দা সুরভি দাস। স্বামী দিন মজুরি করে যা রোজগার করতেন তা দিয়ে সংসার চলত না বলেই গৃহ সহায়িকার কাজ বেছে নিয়েছিলেন সুরভি। লকডাউনের ফলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর কাজে যেতে পারেননি। প্রথম মাসে একটি বাড়ি থেকে বেতন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু পরের মাস থেকে তাও বন্ধ। ফলে দুই সন্তান, বয়স্ক শ্বশুর শাশুড়িকে নিয়ে সমস্যায় পড়েন। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয় সুরভির স্বামীরও। সুরভি জানান, কয়েকমাস খুব কষ্টে কাটে। আশায় ছিলেন ট্রেন চলাচল শুরু হলে আবার গৃহ সহায়িকার কাজে যোগ দিতে পারবেন। কিন্তু ট্রেন চললেও আর কাজ ফিরে পাননি সুরভি। তিনটি বাড়ি থেকেই তাঁকে আর কাজে রাখতে রাজি হয়নি। সুরভির মতোই একই পরিস্থিতির শিকার হন কল্পনা খামারু, কালী দাসরা।
এই অবস্থায় স্থানীয় এক যুবকের সাহায্যে বিকল্প আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। সমরেশ দলুই নামে ওই যুবক প্রায় জনা কুড়ি মহিলাকে রসগোল্লা, লাড্ডু, গজা, মোয়া তৈরির কাজ শিখিয়েছেন। বর্তমানে নানা ধরনের শীতকালীন মিষ্টি তৈরি করছেন সুরভি, কল্পনা, কালীরা। তাঁদের তৈরি মিষ্টি ক্যানিং-সহ আশপাশের বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করছেন সমরেশ।
এই কাজ করে এক একজন মহিলা মাসে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করছেন। সুরভি বলেন, “কাজ হারিয়ে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম। এখন কাজ করে রোজগার করছি।” কল্পনা বলেন, “এই কাজ পেয়ে আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি। কয়েকটা মাস তো দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে।” সমরেশের কথায়, “রোজগার হারিয়ে পরিবারগুলি সমস্যায় পড়েছিল। ওঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করেছি। আগামী দিনে আরও কিছু মানুষকে যাতে বিকল্প কর্মসংস্থান দিতে পারি সেই চেষ্টা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy