Advertisement
E-Paper

মেলা কমিটির তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু

এলাকায় চলছিল ঝুলন মেলা। সেই উপলক্ষে মেলা-চত্বরে টানা হয়েছিল বিদ্যুতের তার। এই তার টানার কাজেই গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন মনোরঞ্জনের পরিবার।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৮
বিপত্তি: এই তার থেকেই দুর্ঘটনা। ইনসেটে, মনোরঞ্জন

বিপত্তি: এই তার থেকেই দুর্ঘটনা। ইনসেটে, মনোরঞ্জন

টিনের চাল সারাই করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাটি ঘটেছে বাগদা পশ্চিমপাড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মনোরঞ্জন বিশ্বাস (৬৪)। তাঁর বাড়ি ঝিকরা এলাকায়।

এলাকায় চলছিল ঝুলন মেলা। সেই উপলক্ষে মেলা-চত্বরে টানা হয়েছিল বিদ্যুতের তার। এই তার টানার কাজেই গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন মনোরঞ্জনের পরিবার। মৃতের বড় ছেলে মলয় মেলা কমিটির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, বেআইনি ভাবে বিদ্যুতের তার টানা হয়েছিল। সেই তারে ‘লিকেজে’র কারণেই বাবার মৃত্যু হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদা পুরনো বাজারে প্রতি বছর ঝুলন মেলা হয়। আয়োজক, বাগদা ঝুলন মেলা কমিটি। বহু মানুষ মেলায় যোগ দেন। অনেক রাত পর্যন্ত মেলা চলে। প্রচুর দোকানপাট বসে। পেশায় দিনমজুর মনোরঞ্জন শুক্রবার সকালে প্রতিমা শিল্পী বাচ্চু তরফদারের বাড়িতে টিনের চাল সারাইয়ের কাজে এসেছিলেন। বাচ্চুর বাড়ি মেলার কাছেই। তাঁর বাড়ির টিনের ছাউনির উপর দিয়েই মেলার বিদ্যুতের তার টানা ছিল। ওই তার থেকে কোনও ভাবে বাচ্চুর বাড়ির টিনের চাল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যায়। মেরামত করতে মনোরঞ্জন টিনের চালে উঠতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

বাচ্চু বলেন, ‘‘প্রথমে মনে হয়েছিল উনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ওঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে আমিও শক খেয়ে পড়ে যাই। ছুটে গিয়ে বাড়ির বিদ্যুতের স্যুইচ বন্ধ করি। তারপরে মনোরঞ্জনকে ফের বাঁচাতে গিয়ে আবারও শক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে জানতে পারি, আমার ঘরের উপর দিয়ে যাওয়া ওই তার থেকেই এই ঘটনা। ওই তার কারা টেনেছিল জানি না। এ ক্ষেত্রে আমার কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।’’

এলাকার লোকজন বাচ্চুর বাঁশ দিয়ে মনোরঞ্জনকে তার থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। এক মহিলা চালের উপর দিয়ে যাওয়া তারটি বাঁশ দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার পরে মনোরঞ্জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই মানুষের ক্ষোভ মেলা কমিটির উপরে গিয়ে পড়ে।

মেলা কমিটির সম্পাদক রবিন অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতর থেকে ১২-১৯ অগস্ট পর্যন্ত মেলায় বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে বিদ্যুৎসংযোগ ঠিকঠাক ভাবে নেওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়মিত দেখে যেতেন। লোড বেশি হচ্ছে কিনা, তা-ও মেপে গিয়েছেন। তারে ‘লিকেজ’ হচ্ছে কিনা সেটা দেখা তাঁদেরই দায়িত্ব।’’ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেডের বনগাঁ ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলা কমিটির আবেদনের ভিত্তিতে দু’টি ট্রান্সমিটার থেকে সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। মেলা মিটে যাওয়ার পরে তা যথারীতি খুলে নেওয়া হয়েছে। যে তারে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, ওই তারের সংযোগ তারা দেয়নি। সেটা বেআইনি ভাবে টানা হয়েছিল। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘মেলা কমিটির বিরুদ্ধে আমরাও থানায় অভিযোগ করব।’’ বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর মেলায় বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা ঘটে। হুকিংও করা হয় বিপজ্জনক ভাবে। অথচ ওই বিষয়ে সরকারি স্তরে কোনও নজরদারি থাকে না। — ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

Kachua Accident in Kachua Pilgrim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy