Advertisement
E-Paper

Canning: কে ধরবে আমায়! নম্বরপ্লেটহীন স্কুটিতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিই ‘পথের ছাড়পত্র’ প্রশান্তের

বাসন্তীর বাঁশিরাম গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় রং মিস্ত্রি প্রশান্ত সরকার শহর থেকে শহরতলির অলিগলি ঘুরে বেড়ান কাজের জন্য। স্কুটিই তাঁর সঙ্গী।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২২ ০৭:১১
কেয়ার-করি-না: স্কুটি নিয়ে রাস্তায় প্রশান্ত সরকার।

কেয়ার-করি-না: স্কুটি নিয়ে রাস্তায় প্রশান্ত সরকার। নিজস্ব চিত্র।

নীল-সাদা স্কুটিতে লাগানো মুখ্যমন্ত্রীর ছবিই তাঁর কাছে নিয়ম ভাঙার হাতিয়ার!

বাসন্তীর বাঁশিরাম গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় রং মিস্ত্রি প্রশান্ত সরকার শহর থেকে শহরতলির অলিগলি ঘুরে বেড়ান কাজের জন্য। স্কুটিই তাঁর সঙ্গী। কিন্তু সেই স্কুটিতে না দেখা যায় নম্বর প্লেট, না আছে বৈধ কাগজপত্র। তবে স্কুটির গায়ে সাঁটা আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। প্রশান্তের দাবি, স্কুটারে ওই ছবিই তাঁর সর্বত্র বিচরণের ‘পাসপোর্ট’। পুলিশ ধরে না? প্রশান্তের গর্বিত উত্তর, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো গাড়ি দেখলে কে আটকাবে! পুলিশের ক্ষমতা আছে?’’ নিজেকে তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দেন প্রশান্ত। গর্ব করে সকলকে বলে বেড়ান, ‘‘এ হল দিদির গাড়ি!’’

আমির খান অভিনীত ‘পিকে’ ছবিতে চরিত্রটি দুই গালে দেবদেবীর ছবি সেঁটে রেখেছিল। রেগেমেগে মারতে চাইলেও ভগনাবেনর ছবি দেখে নাকি লোকে পিছু হটবে, এই ছিল তার যুক্তি। প্রশান্তর যুক্তিও খানিক তেমনই। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকলেই তিনি নাকি আইনের চোখে অস্পৃশ্য!

রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের গাড়ির সামনে দলের ব্যাজ, পতাকা লাগিয়ে রাখতে দেখা যায় হামেশাই। সে সব দেখলে নাকি পুলিশ ধরে না, এমনটা বলে থাকেন নেতাদের অনেকেও। প্রশান্ত বলেন, “১৯৯৭ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনীতি করি। সেই সময়ে টালিগঞ্জে কংগ্রেসের মিছিলের উপরে পুলিশ হামলা চালায়। আমি আক্রান্ত হই। হাসপাতালে সমস্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন দিদি।” সেই থেকেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ অনুগামী। বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে অবাধে স্কুটার চালানোর লাইসেন্স নাকি তাঁকে দিয়েছে দিদির ছবিওয়ালা স্কুটি!

পুলিশ অবশ্য প্রশান্তর যুক্তিকে আমল দিচ্ছে না। বারুইপুর পুলিশ জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার ট্রাফিক সৌম্যশান্ত পাহাড়ি বলেন, “এমন কোনও নিয়ম নেই, রাজনৈতিক দলের প্রতীক, ব্যাজ বা উত্তরীয় গাড়িতে থাকলে কেউ আইনের হাত থেকে পার পেয়ে যাবেন। সব সময়েই রাস্তায় নিয়মভঙ্গকারীকে আটকে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।”

প্রশান্তর স্কুটির কথা জানতে পেরে বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীই শিখিয়েছেন, ট্রাফিক আইন মেনে চলতে। সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচির তিনি প্রবক্তা। ফলে তাঁর ছবি গাড়িতে সাঁটিয়ে যিনি আইন ভাঙছেন, তিনি অন্যায় করছেন। তিনি বরং মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করছেন। উনি যদি সত্যিই দিদির অনুগামী হন, তা হলে তাঁর সম্মানেই ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আরটিও সজল অধিকারী অবশ্য প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারব না। এ বিষয়ে কথা বলার কোনও এক্তিয়ার আমার নেই।”

তবে কী প্রশান্তর স্কুটার এমনই নিয়ম ভেঙে ঘুরবে যত্রতত্র? স্পষ্ট উত্তর নেই পুলিশ-প্রশাসনের কথায়।

Mamata Banerjee Canning
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy