Advertisement
E-Paper

সন্তানের জন্ম দিয়ে মৃত্যু হল মায়ের

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে। মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আসে। রোগীর আত্মীয় ও এলাকার মানুষ হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ কর্মীরা তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৬
মমতা দাস

মমতা দাস

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে।

মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আসে। রোগীর আত্মীয় ও এলাকার মানুষ হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ কর্মীরা তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতোর কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। মমতা দাস (২২) নামে ওই মহিলার মৃত্যুতে চিকি‌ৎসায় গাফিলতি আছে বলে অভিযোগ পরিবারের। পুলিশের কাছেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, পালমোনারি এমবলিজমের (ফুসফুসে রক্ত চলাচল বন্ধ) ফলে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে নিশ্চিত হতে দেহ ময়না-তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ সুপারের আশ্বাস, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

মমতার শ্বশুরবাড়ি হাবরা থানার লক্ষ্মীপুর মাঠপাড়ায়। বাপের বাড়ি বনগাঁ শহরের শক্তিগড়ে। বছরখানেক আগে তাঁর বিয়ে হয়েছে। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে মমতাদেবীকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করে পুত্র সন্তান প্রসব করেন তিনি। সে সময়ে মা-ছেলে দু’জনেই সুস্থ ছিলেন। রাতে মহিলাকে প্রসূতি ওয়ার্ডে রাখা হয়।

তাঁর দাদা বাপি বলেন, ‘‘আমরা হাসপাতালে আয়া রেখেছিলাম টাকা দিয়ে। আমাদের দু’টি ফোন নম্বর ওয়ার্ডের আয়া ও নার্সদের কাছে রাখা ছিল। যদিও কোনও প্রয়োজন হয়, তাঁরা যেন যোগাযোগ করেন, সে কথা বলা হয়েছিল। তা ছাড়া, আমরা ওয়ার্ডের বাইরে সারা রাত ছিলাম।’’ কিন্তু তা সত্ত্বেও মমতার শারিরীক অবস্থা খারাপ হচ্ছে, সে কথা কেন তাঁদের সময় মতো জানানো হল না, সে প্রশ্ন তুলছেন বাপিবাবুরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ মমতাদেবীর জ্বর আসে। অন কলে থাকা চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডল তাঁকে ওই সময়ে ওয়ার্ডে দেখেও যান। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরিবারের সদস্যেরা বাইরে থেকে ওষুধ কিনে দেন।

অভিযোগ, তারপরে আর মমতাদেবীর শারীরিক অবস্থার কোনও খোঁজ তাঁরা পাননি। বাপিবাবু বলেন, ‘‘ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ একজন আয়া আমাদের ওয়ার্ডে ডেকে নেন। ভিতরে গিয়ে দেখি, বোন মারা গিয়েছে।’’ মৃতের স্বামী তারক দাস পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁর দাবি, মমতার শরীর খারাপ হচ্ছে, সে কথা তাঁদের বলা হয়নি। চিকিৎসককেও খবর দেওয়া হয়েছে দেরিতে। আয়া ও নার্সদের গাফিলতিতেই মারা গিয়েছেন স্ত্রী।

হাসপাতালে আয়াদের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে। মৃতার মা জয়ন্তীদেবী বলেন, ‘‘আয়াদের টাকা দিয়ে রাখা হলেও তারা রাতে রোগীর খেয়াল রাখে না। কিছু বলতে গেলে উল্টে দুর্ব্যবহার করে।’’ মমতাদেবীর বাড়ির লোকের অনুমান, নার্স বা আয়ারা হয় তো ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। যে কারণে, পরে কখন মমতার শারিরীক অবস্থার অবনতি হল, তা বুঝতেই পারেননি তাঁরা। ফলে সময় মতো চিকিৎসককে খবরই দেওয়া যায়নি।

Medical negligence Mother
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy