Advertisement
১০ মে ২০২৪

মেয়েকে দেখে ক্যারাটেতে উৎসাহী মা, শেখাচ্ছেন অন্যদেরও

মেয়ে যখন স্কুলে পড়ত, তখন তাকে সল্টলেকে ক্যারাটে শেখাতে নিয়ে যেতেন কবিতা। মেয়েকে দেখে নিজেও ক্যারাটে শেখা শুরু করেন।

মুখোমুখি: ক্যারাটের তালিম নিচ্ছেন মা-মেয়ে। নিজস্ব চিত্র

মুখোমুখি: ক্যারাটের তালিম নিচ্ছেন মা-মেয়ে। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৫
Share: Save:

মেয়েকে আত্মরক্ষার পাঠ দিতে ক্যারাটে শেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মেয়েকে নিয়ে বসিরহাট থেকে যেতেন সল্টলেকের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। মেয়েকে শিখতে দেখতে দেখতে এক দিন নিজেই ক্যারাটে শেখার সিদ্ধান্ত নেন। মেয়ের সঙ্গে ক্যারাটে শিখে বসিরহাটের আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা কবিতা বিশ্বাস এখন বাড়িতেই খুলেছেন ক্যারাটে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

কবিতার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে আলোলিকা বসিরহাট কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। মেয়ে যখন স্কুলে পড়ত, তখন তাকে সল্টলেকে ক্যারাটে শেখাতে নিয়ে যেতেন কবিতা। মেয়েকে দেখে নিজেও ক্যারাটে শেখা শুরু করেন। এখন আশ্রমপাড়ার বাড়িতেই বেশ কয়েকজন মেয়েকে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেন। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছোট মেয়ে কৃত্তিকাও ক্যারাটে শেখে মায়ের কাছে। কবিতার কথায়, ‘‘মেয়েকে নিয়ে একাই সল্টলেকে যাতায়াত করতাম। রাতবিরেতে ফিরতাম। নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকেই যেতে বারণ করত। কিন্তু মেয়ের শেখা বন্ধ হোক চাইনি। তাই নিজেই শিখতে শুরু করি। যাতে রাস্তায় কোনও সমস্যা হলে মোকাবিলা করতে পারি।’’

আত্মরক্ষার জন্য প্রতিটি মেয়েরই ক্যারাটে শেখা উচিত বলে মনে করেন কবিতা। তাঁর কথায়, ‘‘আগে রাতবিরেতে রাস্তাঘাটে একা চলাফেরা করতে ভয় লাগত। কিন্তু এখন মনের জোর অনেক বেড়ে গিয়েছে। জানি, দু’চার জন সামনে এলে একাই সামলে নিতে পারব।’’

মায়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রায়ই হাজির থাকেন আলোলিকা। বললেন, ‘‘একবার তিন জন ছেলে অসভ্যতা করায় মেরে নাক-মুখ ফাটিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর থেকে আশেপাশে সকলেই আমায় সমঝে চলে। প্রতিটি মেয়ের উচিত নিজের জন্য ক্যারাটে শেখা। শুধু পুলিশ-প্রশাসনের উপরে ভরসা রাখলে হবে না। নিজেকে ভয়হীন, শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।’’ পড়াশোনা শেষ করে পুলিশে চাকরি করতে চান বলে জানান আলোলিকা। যে ভাবে মহিলাদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটছে তাতে প্রত্যেক স্কুল-কলেজে ক্যারাটে প্রশিক্ষণের দাবি জানান কবিতা এবং অলোলিকা।

সম্প্রতি বসিরহাটগামী ট্রেনের কামরায় মহিলাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় এক যুবককে ক্যারাটের প্যাঁচে কাত করেন টাকি কলেজের ছাত্রী অলিভিয়া দাস। কবিতা, আলোললিকার মতো অলিভিয়াও চাইছেন আত্মরক্ষায় ক্যারাটে শিখুক প্রতিটি মেয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mother Daughter Karate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE