Advertisement
E-Paper

ক্যামেরা দেখে প্রশ্ন করেন মা

হরিদেবপুরের বাসিন্দা অসীমকান্তি পালকে খুনের ঘটনায় ধৃত অসীম সরকারকে জেরা করে এই তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, খেতমজুর বাবার অভাবের সংসারে বড় হলেও অসীমের স্বপ্ন ছিল অনেক।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৬
ধৃত: অসীম সরকার। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: অসীম সরকার। নিজস্ব চিত্র

দামী ক্যামেরাটা একবার হাতে এলে ভাড়া দিয়ে অন্তত কিছু টাকা আসবে ঘরে, ভেবেছিল অসীম সরকার। ভাল একটা ক্যামেরা হাতে থাকলে ফিল্ম-সিরিয়ালের জগতে পা ফেলতেও সুবিধা হবে, এমনটাই আশা ছিল তার।

৩০ জুলাই রাতে অসীমকান্তি পালকে খুন করে তাঁর ক্যামেরা নিয়ে বাড়ি ফেরার পরে মা দেখে ফেলেন। জানতে চান, এত দামী ক্যামেরা এল কোথা থেকে? অসীম উত্তর দিয়েছিল, ক্যামেরাটি এক বন্ধুর। কাজ মিটে গেলে ফেরত দিয়ে দেবে।

অসীমের মা সে সময়ে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি, ছেলে কাউকে খুন করে ক্যামেরা হাতিয়ে এনেছে।

হরিদেবপুরের বাসিন্দা অসীমকান্তি পালকে খুনের ঘটনায় ধৃত অসীম সরকারকে জেরা করে এই তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, খেতমজুর বাবার অভাবের সংসারে বড় হলেও অসীমের স্বপ্ন ছিল অনেক। নিজে কবিতা-গল্প-চিত্রনাট্য লিখত। রুপোলি পর্দায় সহকারী পরিচালক বা ক্যামেরাম্যান হওয়ার সাধ ছিল তার।

কিন্তু উন্নতির রাস্তা কিছুতেই ধরা দিচ্ছিল না অসীমের কাছে। হাবরার এক যুবকের সঙ্গে সহযোগী ক্যামেরাম্যান হিসাবে কাজ করত সে। সামান্য টাকা পেত। ভিডিওগ্রাফি করার প্রথাগত তালিম ছিল না তার।

ওই যুবকের মাধ্যমেই গত বছর নভেম্বরে তার আলাপ হয় অসীমকান্তিবাবুর সঙ্গে। তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করেন। তাঁকে নিজের গল্প-চিত্রনাট্য শুনিয়েছিল অসীম। অসীমকান্তিবাবু আবার রামপুরহাটের এক পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন অসীমের। তাঁকে নিজের চিত্রনাট্য শুনিয়েছিল অসীম। কিন্তু তা পছন্দ হয়নি ওই পরিচালকের।

গত নভেম্বরে বহরমপুরে অসীমকান্তিবাবুর সঙ্গে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির শ্যুটিংয়ে গিয়ে তাঁর ৬ লক্ষ টাকা দামের ক্যামেরাটি নজরে পড়ে অসীমের। তখন থেকেই সেটি হাতানোর কথা ভাবতে শুরু করে সে।

তদন্তের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে শনিবার গোপালনগর থানায় আসেন উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সি সুধাকর। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘ক্যামেরা ভাড়া দিয়ে রোজগারের আশা করেছিল ছেলেটি।’’ কিন্তু নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা যুবক কেন অসীমকান্তিবাবুকে সাতবেড়িয়ায় নিয়ে গিয়ে খুন করল?

তদন্তকারীরা জেরায় জানতে পেরেছেন, বছর তিনেক আগে নদিয়ার এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম ছিল অসীমের। সে সময়ে গোপালনগরের সাতবেড়িয়া এলাকায় যাতায়াত ছিল তার। এলাকাটি সন্ধের পরে সুনসান থাকে, জানত অসীম। সে কারণেই অসীমকান্তিকে সেখানে নিয়ে গিয়ে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে সে, অভিযোগ এমনটাই।

খুনের পরে অসীমকান্তিবাবুর মোবাইল ব্যাটারি, সিমকার্ড খুলে ফেলে দেয়। ট্রেনে হাবরা স্টেশনে ফেরার পথে নিজের মোবাইলটিও ফেলে দেয়। ফোনটি নগরউখরার একটি দোকান থেকে কিনেছিল অসীম। পুলিশের দাবি, ফোন কেনার সময়ে অসীম বলেছিল, খুব পুরনো, অনেকের ব্যবহৃত একটি ফোন কিনতে চায় সে। অসীমের ধারণা ছিল, পুরনো হ্যান্ডসেট ব্যবহার করলে তদন্তকারীরা তাকে খুঁজে পাবেন না।

Camera Film Industry Mega Serial অসীম সরকার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy