Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
প্ররোচনার অভিযোগ দলেরই নেতার বিরুদ্ধে
Attempt to Murder

তৃণমূল নেত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ

স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও তৃণমূলের একাংশের মতে, অনিমার সঙ্গে জাফরের অনেক দিন ধরেই রাজনৈতিক বিরোধ চলছে।

আহত অনিমা মণ্ডল।

আহত অনিমা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪১
Share: Save:

জমি নিয়ে বিবাদের জেরে বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল নেত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল। আক্রান্ত নেত্রীর নাম অনিমা মণ্ডল। তাঁর স্বামী কালীপদ, ছেলে রাজীব ও বৌমা পম্পাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগর থানার পাঁচবেড়িয়া এলাকায়। অনিমা বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সহ সভাপতি জাফর আলি মণ্ডলের বিরুদ্ধে। অনিমার ছেলে রাজীব গোপালনগর থানায় জাফর-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বুধবার রাতে পুলিশ ভবেশ সরকার নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানায়, বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। খোঁজ চলছে।

জাফরের দাবি, রাজনৈতিক আক্রোশের জেরে তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। জাফরের কথায়, “এ বার পঞ্চায়েত ভোটে অনিমাকে দল প্রার্থী করেনি। তাঁর ভাইয়ের ছেলের স্ত্রী গঙ্গানন্দপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হতে পারেননি। কারণ, বাকি সদস্যেরা তাঁকে কেউ সমর্থন করেননি। এই সব আক্রোশে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”

গোটা ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিমাদের সঙ্গে প্রতিবেশীদের বাড়ির পশ্চিম দিকের জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগে রাজীব জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর জাফর তাঁকে ডাকেন। প্রতিবেশীদের দাবি মতো জমি ছেড়ে দিতে বলেন। কথা না শুনলে প্রাণনাশ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের হুমকি দেন। রাজীব বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে জাফরের লোকেরা হামলা চালিয়েছে।”

স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও তৃণমূলের একাংশের মতে, অনিমার সঙ্গে জাফরের অনেক দিন ধরেই রাজনৈতিক বিরোধ চলছে। গঙ্গানন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকায় কার প্রভাব বেশি থাকবে, এটা নিয়েই মূলত বিরোধ। অনিমার ঘনিষ্ঠেরা মনে করেন, জাফর কলকাঠি নাড়ানোর ফলেই অনিমা প্রার্থী হতে পারেননি।

যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে জাফর বলেন, “ঘটনার কথা আমার জানাই ছিল না। বুধবার বিকেলে খবর পাই, দু’টি পরিবারের মধ্যে জমির আল নিয়ে গোলমাল হয়েছে। আমি বুধবার পঞ্চায়েত সমিতিতে ছিলাম। পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে আর পাঁচবেড়িয়া এলাকায় যাইনি।”

তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “শুনেছি জমি নিয়ে বিবাদের জেরে অনিমার উপরে হামলা হয়েছে। পুলিশকে বলেছি নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে। দলীয় ভাবেও আমরা তদন্ত করছি। এই ঘটনায় যদি দলের কারও মদত থাকে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”

গোটা ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের নেতা-নেত্রীর মধ্যে এলাকা দখল ও ক্ষমতার লড়াইয়ের জেরে এই ঘটনা। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE