Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভাতেও ভিড়
TMC

TMC Martyr's Day: অনুষ্ঠানে কোভিড-বিধি ভাঙল দুই জেলাতেই

করোনা বিধি উড়িয়ে জাময়েত হল। আবার কোথাও ছিল মাংস-ভাতের আয়োজন।

অসচেতন: মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল সভা দেখতে মানুষের ভিড়। বনগাঁ ডিএন ৪৪ বাসস্ট্যান্ডে।

অসচেতন: মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল সভা দেখতে মানুষের ভিড়। বনগাঁ ডিএন ৪৪ বাসস্ট্যান্ডে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ০৬:১৩
Share: Save:

তৃণমূলের ২১ জুলাই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সর্বত্র। দলনেত্রীর বক্তৃতা শোনাতে টিভি, জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ জায়গায় জমায়েত ছিল কম। এরই মধ্যে অবশ্য বসিরহাটে চলল গানের তালে নাচ ও ভুরিভোজ। অশোকনগরে করোনা বিধি উড়িয়ে জাময়েত হল। ভাঙড়ে আবার কোথাও ছিল মাংস-ভাতের আয়োজন। কোথাও ঢালাও লাচ্চা পরোটা, সিমুইয়ের ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে কোভিড-বিধি লঙ্ঘিত হল বহু ক্ষেত্রে।

বুধবার দুপুরে বসিরহাট পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ট্যাঁটরা বাজার সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের কাছে প্যান্ডেল করে বড় টিভি লাগানো হয়। অস্থায়ী শহিদ বেদি তৈরি হয়। সকালে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করার পরে প্যান্ডেলের মধ্যে গানের তালে নাচতে দেখা যায় তৃণমূলের কিছু কর্মীদের। বাকিরা হাততালি দিয়ে সঙ্গ দেন। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, দুপুরে ভুরিভোজের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রায় দু’শো কর্মী-সমর্থক খেয়েছেন। মেনুতে ছিল ডাল, আলুভাজা এবং মুরগির মাংস-ভাত।

আয়োজকদের তরফে প্রাক্তন কাউন্সিলর পরিমল মজুমদার বলেন, ‘‘একুশে জুলাই মনে আমাদের কাছে আবেগের দিন। করোনার জন্য আনন্দ করে ওঠা যায়নি। বৃষ্টি আসতে পারে এই চিন্তায় প্যান্ডেল করে, টিভি লাগিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনার ব্যবস্থা করা হয়। সকাল থেকে কর্মীরা আসায় খাওয়ার জন্য মাংস-ভাতের ব্যবস্থা হয়েছিল।’’

তবে ২১ জুলাই এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলীয় নেতৃত্ব। বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রকম ছবি দেখেছি। তবে আজকের দিনে এ রকম কাজ করা মোটেও উচিত হয়নি। আমি ওই কাউন্সিলরের কাছে জানতে চেয়েছি, এ সব কেন করা হল। এ বিষয়ে আমরা দলীয় ভাবে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেব।’’

অশোকনগরের মিলেনিয়াম পার্ক এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনানো হয়। প্রায় দু’শো নেতা-কর্মী ছিলেন। শারীরিক দূরত্ব বজায় ছিল না। অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। কারও মাস্ক নেমে এসেছিল থুতনিতে। টোটো-অটো-বাইক-ছোট গাড়িতে কর্মীরা আসেন। ভিড় বেশি থাকায় অস্থায়ী খাবারের দোকানপাট বসে যায়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে কর্মসূচিতে চিকিৎসকদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কয়েকজন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগদান করেছেন।

অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সমীর দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রেখে, মাস্ক পরে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।’’

মাংস-ভাত, সিমুই-লাচ্চা পরোটার ঢালাও আয়োজন হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের নানা এলাকাতেও।

ভাঙড় ২ ব্লকের কুলবেড়িয়া গ্রামে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ঘনিষ্ঠ সাবির শেখ প্যান্ডেল খাটিয়ে জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করেন। সেখানে কোভিড-বিধি অমান্য করে বহু মানুষকে গাদাগাদি করে বসে থাকতে দেখা যায়। অধিকাংশ মানুষের মাস্ক ছিল না। শারীরিক দূরত্ববিধিও মানা হয়নি। খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা ছিল।

আয়োজন: চলছে মাংস রান্না। বসিরহাটের ট্যাঁটরা বাজার এলাকায়।

আয়োজন: চলছে মাংস রান্না। বসিরহাটের ট্যাঁটরা বাজার এলাকায়। ছবি: নির্মল বসু।

ভাঙড়ের বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতে তৃণমূল নেতা পাঁচু মণ্ডলের উদ্যোগে জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে ভার্চুয়াল বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে উপস্থিত সকলকে পাত পেড়ে মাংস-ভাত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।

ভাঙড় প্রাণগঞ্জ বাজার পার্টি অফিসেও দলীয় কর্মীদের একত্রিত করে জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে ভার্চুয়াল সভা শোনানোর ব্যবস্থা ছিল। কোথাও কোভিড-বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ।

ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা কোভিড-বিধি মেনে সবাইকে মাস্ক পরার জন্য বলেছিলাম। স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল সভা শোনার জন্য মানুষের উৎসাহ, উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সে কারণে সমস্ত বিধিনিষেধ ভুলে গিয়ে মানুষ একত্রিত হয়েছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC TMC Martyr's Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE