E-Paper

দুর্নীতির অভিযোগে পানিহাটিতে বন্ধ অনলাইনে মিউটেশন

সূত্রের খবর, পরবর্তী চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি, ফ্ল্যাটের মিউটেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:১০
পানিহাটি পুরসভা।

পানিহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

মিউটেশন নিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ আগেই ছিল। অভিযোগ, দুর্নীতি-চক্রে কারা জড়িত, তার সন্ধানের বদলে আপাতত মিউটেশন বন্ধ রেখেছে পানিহাটি পুরসভা। সূত্রের খবর, পরবর্তী চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি, ফ্ল্যাটের মিউটেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

রাজ্যের প্রায় সমস্ত পুরসভাতেই অনলাইনে মিউটেশন চালু করেছে সরকার। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই মিউটেশন ঘিরে পানিহাটিতে দালাল-চক্র সক্রিয় বলে অভিযোগ উঠছিল। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ২০২২ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বড় বাড়ি, ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে মোট মূল্যায়নের প্রতি লক্ষ টাকায় ১ শতাংশ, ছোট বাড়ি-ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ০.৫ শতাংশ এবং দানপত্রের ক্ষেত্রে ০.২৫ শতাংশ মিউটেশন ফি নেওয়া হয়। কিন্তু বছর কয়েক আগে পানিহাটি পুরসভায় সিদ্ধান্ত হয়, স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির চিঠি নিয়ে এলে মোট মূল্যায়নের প্রতি লক্ষে ০.২৫ শতাংশ মিউটেশন ফি নেওয়া হবে।

অভিযোগ, এখানেই তৈরি হয়েছিল সমস্যা। যাঁদের কাছে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির চিঠি ছিল না, তাঁদের ১ শতাংশের কমে মিউটেশন করে দেওয়ার বিষয়ে রফা করছিল দালালেরা। পুরসভার মধ্যেই সক্রিয় ছিল সেই দালাল-চক্র। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কারও ক্ষেত্রে ০.৫০ শতাংশ, আবার কারও ক্ষেত্রে ০.৭৫ শতাংশে মিউটেশন করা হচ্ছিল। যদিও তার জন্য কোনও রসিদ দেওয়া হত না। সূত্রের খবর, ওই টাকা দিতে হত দালালকে। কিন্তু মিউটেশন হওয়ার পরে মোবাইলে আসা মেসেজে দেখা যেত, আদতে মিউটেশন হয়েছে ০.২৫ শতাংশ ফি-তে। অর্থাৎ সেই পরিমাণই টাকা জমা পড়েছে পুর কোষাগারে। বাকি টাকার হদিস ছিল না।

রাজনৈতিক মহলের দাবি, ঠিক ভাবে মিউটেশন ফি আদায় না হওয়ায় রাজস্বে ঘাটতি হচ্ছে জেনেও হেলদোল ছিল না পুর কর্তৃপক্ষের। উল্টে পুরসভা চালাতে স্থায়ী আমানত ভেঙে ফেলা হয়েছিল। স্থানীয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কটাক্ষ, পানিহাটি পুরসভা কোথা থেকে, কে নিয়ন্ত্রণ করত, তা সকলেরই জানা। গত ২৪ মার্চ নতুন পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া সোমনাথ দে বলেন, ‘‘৩১ মার্চ থেকে অনলাইনে মিউটেশন বন্ধ রয়েছে। তবে ফি কোন ক্ষেত্রে কতটা হওয়া উচিত, সেই বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশিকা নিয়ে পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিককে উপ পুরপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করতে বলা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পোর্টাল যে কোনও মুহূর্তে চালু হবে। সেখানেই মিউটেশন করতে হবে। তবে পয়লা বৈশাখের পরেই চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠকে আলোচনার শেষে মিউটেশন শুরু করা হবে।’’

কিন্তু এত দিন ধরে মিউটেশনকে কেন্দ্র করে কে বা কারা দুর্নীতি-চক্র চালাল? তার তদন্ত হবে কি? সোমনাথ বলেন, ‘‘আমি পুরপ্রধান হওয়ার পরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি কানে এসেছে, আমরাও খতিয়ে দেখছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panihati municipality Panihati Mutation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy