Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাসাদুরের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে গোলমাল, হেনস্থা বিধায়ককে

ইংলিশ চ্যানেল জয়ী সাঁতারু মাসাদুর রহমানের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান চলাকালীন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। যার জেরে হেনস্থা হতে হয়েছে দলের বিধায়ককেও। অনুষ্ঠানও পণ্ড হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েতের রায়কোলা হাইস্কুলে। যার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন বিধায়ক এম নুরুজ্জামান। দোষীদের শাস্তির জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।

আতঙ্কে অসুস্থ। —নিজস্ব চিত্র।

আতঙ্কে অসুস্থ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০১:৫৯
Share: Save:

ইংলিশ চ্যানেল জয়ী সাঁতারু মাসাদুর রহমানের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান চলাকালীন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। যার জেরে হেনস্থা হতে হয়েছে দলের বিধায়ককেও। অনুষ্ঠানও পণ্ড হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েতের রায়কোলা হাইস্কুলে। যার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন বিধায়ক এম নুরুজ্জামান। দোষীদের শাস্তির জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।

রায়কোলা হাইস্কুলে পড়তেন সদ্য প্রয়াত সাঁতারু মাসুদুর। এ দিন দুপুরে স্কুল চত্বরে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। বিধায়ক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাবরার প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা প্রণব ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য তথা কংগ্রেস নেতা আলি আহমেদ, দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি লিলু মোস্থারি খানম-সহ অনেকে। আমুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল নেতা হাফিজুর রহমান ওরফে আরিফও এসেছিলেন। তিনি রায়কোলা হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির বর্তমান সভাপতিও বটে। তাঁকে তৃণমূল বিধায়কের পাশে বসতে দেখে উপস্থিত জনতার একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাদের দাবি, বিধায়কের জন্যই অন্য গ্রামের একজনকে রায়কোলা হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। যা কিছুতেই মানা সম্ভব নয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল, হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি চলে। আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে গিয়ে দুই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। নুরুজ্জামান ও আরিফ একটি ঘরে আশ্রয় নেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। তারাই দু’জনকে স্কুল চত্বর থেকে বের করে আনে।

প্রধান শিক্ষক শেখ আফসার আলির কথায়, ‘‘বিশিষ্ট প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যুতে বহু মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কয়েক জনের জন্য এমন একটা শোকস্তব্ধ পরিবেশের ছন্দপতন ঘটবে তা ভাবা যায়নি। আমরা সকলেই বেদনাহত।’’

বিধায়ক বলেন, ‘‘আরিফকে হঠাৎই কিছু লোক মারধর করতে থাকে। তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলে আমাকেও হেনস্থা করা হয়।’’ দুষ্কৃতীরা কোন দলের, বিধায়ক তা বলতে অস্বীকার করলেও বলেন, ‘‘আরিফ একজন শিক্ষিত মানুষ। শিক্ষকতা করেন। দীর্ঘ দিন পঞ্চায়েত চালানোর অভিজ্ঞতা থাকায় তাঁকে স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। তা কয়েক জন সহ্য করতে পারছে না বলে হামলা চালাল।’’ আরিফের বক্তব্য, ‘‘বিধায়ক আমাকে সভাপতি করেছেন তা কয়েক জন মানতে পারছেন না।’’

পরিচালন কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা জিব্রাইল হোসেন বলেন, ‘‘কোনও বহিরাগতকে পরিচালন কমিটির সভাপতি বলে মানা সম্ভব নয়। সে কারণে তাঁকে অনুষ্ঠান মঞ্চ ছেড়ে নেমে আসার জন্য বলা হয়েছিল। তা না শুনে গণ্ডগোল করায় অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।’’ স্থানীয় কাউকে পরিচালন কমিটির সভাপতি করতে হবে বলে ওই তৃণমূল নেতার দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE