Advertisement
E-Paper

ব্লিচিং-চুন কেনার টাকা দেবে পঞ্চায়েত

গোপালনগর থানার পাল্লা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রসুলপুরে এখন এই পরিস্থিতি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এলাকায় সরকারি ভাবে মশা মারার কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩১
উদ্যোগ: গ্রামবাসীরা নিজেই নিয়েছেন দায়িত্ব। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

উদ্যোগ: গ্রামবাসীরা নিজেই নিয়েছেন দায়িত্ব। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বেশ কিছু দিন ধরেই এলাকায় জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে। অনেকের রক্তে মিলেছে এনএস-১ পজিটিভ। দুই মহিলা-সহ এলাকার তিন বাসিন্দা ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। এখনও বেশ কিছু গ্রামবাসী জ্বর নিয়ে হাসপাতাল বা বাড়িতে চিকিৎসাধীন।

গোপালনগর থানার পাল্লা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রসুলপুরে এখন এই পরিস্থিতি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এলাকায় সরকারি ভাবে মশা মারার কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের। পঞ্চায়েতকে জানানো হলে তাঁরাও নড়ে বসছে না বলে জানালেন গ্রামের মানুষজন। মশা মারার স্প্রে করা তো দূরের কথা, সামান্য ব্লিচিং পাউডার ছড়াতেও সরকারি কর্মীদের দেখান মিলছে না।

এ বার জ্বর থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা নিজেরাই এগিয়ে এলেন। স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মী অরুণ সরকার রবিবার নিজের টাকা দিয়ে চুন-ব্লিচিং-কেরোসিন তেল কিনে এনেছেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সে সব ছড়াচ্ছেন। সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য প্রকাশচন্দ্র সরকারও। প্রকাশবাবু বলেন, ‘‘তিনজন গ্রামবাসী জ্বরে মারা গিয়েছেন। অনেকে জ্বর ও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছে, গ্রামবাসীরা নিজেরা জিনিসপত্র কিনে ছড়ানো শুরু করলে পঞ্চায়েত থেকে সেই টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।’’

এত দিন ওই কাজ শুরু হল না কেন? সদুত্তর মেলেনি। অরুণবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। না দিলেও আমরা নিজেদের বাঁচাতে চুন-ব্লিচিং-কেরোসিন ছড়ানোর কাজ চালিয়ে যাব।’’

রবিবার সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, প্রলয় সরকার, দিলীপ সরকার, বাবলু সরকারের মতো কয়েকজন গ্রামবাসী বাড়ি বাড়ি গিয়ে চুন-ব্লিচিং-কেরোসিন ছড়াচ্ছেন। এলাকার নিকাশির হাল খারাপ। বৃষ্টির জমা জলে বাড়ির উঠোনে বা পাশের ডোবা ভরে রয়েছে। চারিদিকে অসংখ্য ডোবা।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমিত্রা রায়ের বাড়িতে পড়ে আছে বেশ কিছু ভোগের মালসা। তাতে জল জমে। মশাও দেখা গেল। যাঁরা চুন ছড়াচ্ছিলেন, তাঁরা সব মালসা উল্টে দিতে বললেন। জ্বরে আক্রান্ত কল্যাণী সরকার, ফুলকলি সরকারেরা জানালেন, দিনের বেলাতেও মশারি খাটিয়ে থাকতে হচ্ছে, এতটাই উৎপাত বেড়েছে মশার। মিনতি সরকারের বাড়ির উঠোনে জল জমে। তিনি বললেন, ‘‘কী করব, বৃষ্টির জল বেরোয় না। জলে ডেঙ্গির মশা জন্মায়, সে কথা জানি। কিন্তু উপায় কী!’’

অরুনবাবু নিজের গাড়ি করে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল ও কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। গাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন না। তেল খরচ বাবদ যে যা দিচ্ছেন, হাসিমুখে নিচ্ছেন। বাসিন্দারা জানালেন, জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছেন সুমি দাস, সন্ধ্যা দাস, গোবিন্দ সরকার। গোবিন্দবাবুর বাড়ির সামনে ডোবা। সেখানে এখনও মশা ঘুরে বেড়াতে দেখা গেল।

পাল্লা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে কর্মীর অভাব রয়েছে। তবে গ্রামবাসীরা কাজ শুরু করেছেন।’’ স্থানীয় বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস আশ্বাস দিয়েছেন, পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে আজ, সোমবার থেকে মশা মারার কাজ শুরুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Dengue ডেঙ্গি গোপালনগর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy