Advertisement
E-Paper

রোগীমৃত্যু, মার খেলেন ডাক্তার

আবারও রোগীর পরিবারের হাতে আক্রান্ত হলেন এক চিকিৎসক। সোমবার রাতে কুলতলির জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে এক রোগীমৃত্যুর জেরে চিকিৎসক সম্বিতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ওপর চড়াও হয় রোগীর পরিবারের লোকজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৪
প্রহৃত: চিকিৎসক। —নিজস্ব চিত্র।

প্রহৃত: চিকিৎসক। —নিজস্ব চিত্র।

আবারও রোগীর পরিবারের হাতে আক্রান্ত হলেন এক চিকিৎসক। সোমবার রাতে কুলতলির জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে এক রোগীমৃত্যুর জেরে চিকিৎসক সম্বিতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ওপর চড়াও হয় রোগীর পরিবারের লোকজন। তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রাতেই তাঁকে জয়নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে প্রবল জ্বর, মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আনা হয় সাহানারা মণ্ডল (২৭) নামে এক মহিলাকে। তখন ডিউটিতে ছিলেন চিকিৎসক সুখেন্দু হালদার। তিনিই চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু চিকিৎসায় সে ভাবে সাড়া দেননি রোগী। ঘণ্টাদু’য়েকের মধ্যেই সাহানারার মৃত্যু হয়। জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘খুবই খারাপ অবস্থায় রোগীকে আনা হয়। জ্বরের সঙ্গে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর অবস্থার ক্রমশ অবনতি হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়ও পাইনি।’’

কিন্তু জ্বরে কী ভাবে রোগী মারা গেলেন?

চিকিৎসকরা বলছেন, ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে’ এমনটা হতে পারে। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকায় ডেঙ্গুর কোনও খবর নেই। মহিলা কলকাতায় কাজে যেতেন। সেখান থেকে সংক্রমণ হতে পারে।

তা হলে কি ডেঙ্গুই হয়েছিল?

সুরজিৎ সেন জানান, সেটা পরীক্ষা করার সময়ই পাওয়া যায়নি। রোগীর পরিবার সঠিক তথ্যও দেয়নি বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, তাঁদের বলা হয় একদিনের জ্বর। কিন্তু পরে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন রোগী। তাঁদের কাছে যখন আনা হয় তখন পরিস্থিতি বেশ খারাপ। পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়ই পাওয়া যায়নি।

রোগী মারা যাওয়ার পরই ক্ষেপে ওঠে বাড়ির লোকজন। সুখেন্দু হালদারকে না পেয়ে সম্বিত মুখোপাধ্যায়কেই আক্রমণ করে তারা। তাঁকে মারধর করা হয়। কোমরে-ঘাড়ে চোট পান সম্বিত। কেটে যায় আঙুল। ভেঙে দে‌ওয়া হয় তাঁর চশমা। হাসপাতালকর্মীরা কোনও রকমে সম্বিতকে উদ্ধার করেন। পরে কুলতলি থানার পুলিশ এসে সম্বিতের বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করে। রাতে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার হাসপাতালের বেডে শুয়ে সম্বিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ভাবে আক্রমণ হতে পারে ভাবতেই পারিনি। এরকম চলতে থাকলে নতুন প্রজন্ম আর এই পেশায় আসবে না। ডাক্তাররাও তাঁদের পরের প্রজন্মকে এই পেশায় আনতে চাইবেন না।’’

মঙ্গলবার দুপুরে গোটা ঘটনা জানিয়ে কুলতলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুরজিৎ সেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি উঠেছে। ‘সার্ভিস ডাক্তার ফোরামে’র সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। না হলে চিকিৎসকদের ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ কমবে না। অভিযুক্তদের অবিলম্বে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করতে হবে।’’ দোষীদের শাস্তির দাবি জানান ‘ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরামে’র সম্পাদক

কৌশিক চাকীও।

Medical negligence Doctor চিকিৎসক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy