Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুর পরিষেবা এ বার স্বাভাবিক হবে, আশা করছেন বনগাঁবাসী

৭ ও ৮ জুন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে বনগাঁ পুরসভার ১৪ জন কাউন্সিলর মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থার চিঠি দিয়েছিলেন।

উল্লাস: বনগাঁ পুরসভার সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

উল্লাস: বনগাঁ পুরসভার সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১৩
Share: Save:

চার কাউন্সিলর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে আসায় বনগাঁ শহর জুড়ে উৎসবে মাতল তৃণমূল। বাজি ফোটানো হয় পুরবভবনের সামনে। আবির খেলেন কর্মী-সমর্থকেরা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মিছিল বেরোয়। মিষ্টি বিতরণ করা হয় পথচলতি শহরবাসীর মধ্যে। কিন্তু বিজেপিতে যোগদান করা বাকি কাউন্সিলরেরা কী করবেন? তাঁদেরই এক জন দীপ্তেন্দুবিকাশ বৈরাগী বলেন, ‘‘যা করব, সকলে আলোচনা করেই করব।’’

৭ ও ৮ জুন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে বনগাঁ পুরসভার ১৪ জন কাউন্সিলর মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থার চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁরা দলীয় নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে দলীয় নেতৃত্ব কোনও পদক্ষেপ করছেন না, এই অভিযোগ তুলে ১২ জন কাউন্সিলর দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসও বিজেপিতে যোগ দেন। বনগাঁয় ফিরে ওই কাউন্সিলরেরা সভা করে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন।

পরে অবশ্য শম্পা মোহান্ত নামে এক কাউন্সিলর তৃণমূলে ফিরে আসেন। পুরসভার মোট আসন ২২টি। তৃণমূলের ছিল ২০টি। ১২ জন কাউন্সিলর বিজেপিতে চলে যাওয়ায় তৃণমূল সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে। হাইকোর্টের নির্দেশে ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলরেরা ১৬ জুলাই অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটির ডাক দেন। দু’পক্ষই পরে দাবি করেন, তাঁরা আস্থা ভোটে জয়লাভ করেছেন। বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আদালত কোনও রায়দান করেনি।

আস্থা ভোটের দিন গোলমাল হয়েছিল শহরে। বহিরাগতদের বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শহরে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। আতঙ্ক ছড়ায় শহরবাসীর মধ্যে। পুরসভা নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনে শহরে উন্নয়ন থমকে গিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় মানুষজন। তার মাঝে অস্থায়ী কর্মীরা নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মবিরতির ডাক দেওয়ায় পুর পরিষেবা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে।

চার কাউন্সিলর তৃণমূলে ফেরায় দল ফের সংখ্যাগরিষ্ঠ হল। এ বার পুর এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন বনগাঁর মানুষ।

পুরসভার উপ পুরপ্রধান তৃণমূলের কৃষ্ণা রায় বলেন, ‘‘ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরে এসেছে। খুব আনন্দ হচ্ছে। আমরা চাই, ওরা এ বার এলাকার মানুষের কাজ করুন। শহরের যে উন্নয়ন থমকে গিয়েছিল, তাঁরা এ বার উন্নয়নের কাজে সক্রিয় ভূমিকা নিন।’’

তবে গোলমালের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। তৃণমূলে ফেরা চার কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে।

পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে নানা কথা বলেছেন দলত্যাগীরা। তা হলে কি এ বার সরানো হবে শঙ্করকে?

জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘শঙ্করই পুরপ্রধান থাকবেন। ওঁকে আমরা অন্য রূপে মানুষের সামনে হাজির করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bongaon Municipality TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE