মেলায় ঢোকার মুখেই পরিবেশ নিয়ে সচেতনতার পোস্টার। গঙ্গার ধারে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে পুরসভার নজরদারিও ‘কড়া’। ভ্যাট বসিয়ে লোক মোতায়েন করে আবর্জনা ও প্লাস্টিক এড়ানোর মরিয়া চেষ্টা বছরভর। বছর কয়েক আগে নির্মল পুরসভার তকমা জুটেছিল রীতিমতো কালঘাম ছোটানো পরিশ্রম করেই। কিন্তু এক মেলাতেই তার ছবি বদলে দিল।
শ্যামনগরে গঙ্গার ধারে মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির। পৌষ মাসে জোড়া মূলো দিয়ে এখানে পুজো হয় ধুমধাম করে। আর তাকে ঘিরেই মেলা বসে গঙ্গার ধার বরাবর। সকাল থেকে রাত হরেক রকমের স্টল, বহু লোকের সমাগম। মেলার পিছনে গঙ্গায় নামার পায়ে হাঁটা পথ। শীতের সকালে সেখানেই উত্তুরে হওয়ায় উড়ছে প্লাস্টিক। গঙ্গাতে গিয়েও পড়ছে। মূলত মেলার স্টলগুলো থেকেই এই প্লাস্টিকের স্তূপ জমছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শ্যামনগর স্টেশনের কাছে কালী মন্দির। কালী মন্দিরের পিছনেই ভাটপাড়া পুরসভার অতিথিশালা। এই দুইয়ের মাঝে ফাঁকা জমিতে সাড়ে তিনশো দোকান বসেছে। মেলার আয়োজক খোদ ভাটপাড়া পুরসভা। পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকে প্রচারও চলছে নিয়মিত এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে। প্লাস্টিকের খেলনা, মনোহারি জিনিসপত্র, তেলেভাজা, মিষ্টি সব রকমের দোকানেই প্লাস্টিকের বহুল ব্যবহার।
পাশেই বইমেলা। ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘পুরসভা প্লাস্টিক ব্যবহারের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। গঙ্গা দূষণ রোধে আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের পুর এলাকায় গঙ্গার ধার বরাবর নজরদারি বাড়িয়েছি। কোনও ভাবেই যাতে প্লাস্টিক বা আবর্জনা গঙ্গায় না পড়ে। এ ক্ষেত্রেও আমরা সতর্ক করছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
২০১৩ সালে এই ভাটপাড়া পুরসভাই প্লাস্টিক বর্জনের ডাক দিয়ে কাগজের ব্যাগ বা পাটজাত সামগ্রীর থলে ব্যবহারের ডাক দিয়েছিল। বাজারে ঘুরে ঘুরে দোকানগুলিকেও নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্লাস্টিকের কোনও ব্যাগ বা প্যাকেট ব্যবহার করা যাবে না বলে। কিন্তু মেলায় সেই নিয়মের পরোয়া করেনি কেউ। মেলায় খেলনার দোকান দিয়েছেন অসীম বর্মন, বিভিন্ন রকমের ভাজা মিষ্টির দোকান রয়েছে দেবু ঘোষের। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘মেলায় যে দামে জিনিসপত্র বিক্রি হয় তাতে সস্তার প্লাস্টিক প্যাকেট ছাড়া পড়তায় পোষাবে না। দু’-চার টাকা লাভের জায়গায় যদি দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড় পাওয়া প্লাস্টিক প্যাকেট বা কাগজের ব্যাগেই সেই টাকা চলে যায় তবে আমাদের কী উপার্জন হবে?’’ তবে বাতিল প্লাস্টিকের প্যাকেট ফেলার জন্য মেলার মধ্যে কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নেই বলেই স্টলগুলির পিছনে গঙ্গার ধারে প্লাস্টিক প্যাকেট ফেলা হচ্ছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy