Advertisement
E-Paper

ভুল করে তালিকায় স্ত্রীর নাম, দাবি পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর

পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় নাম উঠেছে ভাঙড় ১ ব্লকের জাগুলগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান কণিকা রায়ের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাগুলগাছির মধ্যপাড়ায় পেল্লায় দোতলা বাড়ি রয়েছে প্রধানের।

সীমান্ত মৈত্র   , সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৫২
পেল্লাই: জাগুলগাছিতে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

পেল্লাই: জাগুলগাছিতে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

দিকে দিকে আবাস যোজনা প্রকল্পে পাকা বাড়ি প্রাপকদের নামের তালিকা ঘিরে দানা বাঁধছে বিতর্ক। অভিযোগ, বহু জায়গায় তালিকা থেকে বাদ গিয়েছেন প্রকৃত গরিব মানুষ। তালিকা তৈরিতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে বহু জায়গায়। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও খোদ পঞ্চায়েত প্রধানের নামও উঠেছে তালিকায়।

বনগাঁ ব্লকের বৈরামপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তনুজা খাতুন মোল্লার নাম রয়েছে পাকা বাড়ি প্রাপকদের তালিকায়। তনুজার স্বামী হায়দারি আলি মোল্লা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা।

স্থানীয় বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক বিজেপির স্বপন মজুমদারের অভিযোগ, “আবাস যোজনার তালিকায় হায়দার আলির স্ত্রী, ভাইপো, ভাইয়ের স্ত্রী-সহ কয়েকজন আত্মীয়-পরিজনের নাম আছে। এঁদের সকলেরই পাকাবাড়ি আছে। ব্লক প্রশাসনের মদতে হায়দার আলি আত্মীয়-পরিজনের নাম তালিকায় তুলে দিয়েছেন। বিষয়টি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে জানানো হচ্ছে।”

হায়দার অবশ্য তাঁর স্ত্রী-সহ আত্মীয় পরিজনদের নাম তালিকায় থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “তালিকায় তনুজা খাতুন মোল্লা নামে এক মহিলার নাম আছে। তাঁর স্বামীর নাম লেখা আছে হায়দার আলি মণ্ডল। কিন্তু আমার নাম হায়দার আলি মোল্লা। আমাদের এখানে তনুজা খাতুন মোল্লা নামে অন্য এক মহিলা আছেন। এটা তাঁর নাম হতে পারে।”

হায়দার বলেন, “২০১৮ সালে তৈরি তালিকায় অনেকেরই নাম ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাননি। তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাকাবাড়ি তৈরি করে নিয়েছেন। তাঁদের নাম এখন বাদ দেওয়া হচ্ছে।”

এ বিষয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “দলীয় ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভুলবশত নাম উঠে থাকলে তা বাদ দেওয়া হবে।” এ ব্যাপারে বনগাঁর বিডিও অর্ঘ্য দত্তকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজের উত্তর দেননি।

মঙ্গলবার এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, কাঁচাবাড়ি থাকা অনেকের নামই তালিকায় নেই। এলাকার বাসিন্দা রুমা মুন্ডা বলেন, “টিনের বাড়িতে থাকি। সরকারি পাকাবাড়ি পাওয়ার জন্য কয়েকবার নথিপত্র জমা করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। অথচ, আগে একবার পাকাবাড়ি পেয়েছেন, এমন কারও কারও নাম এবার তালিকায় আছে বলে শুনছি।”

বৈরামপুর পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিকায় প্রায় তিন হাজার মানুষের নাম ছিল। নতুন করে সমীক্ষার পরে প্রায় ৭০০ নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, তালিকা থেকে তনুজা খাতুন মোল্লার নামটিও বাদ দেওয়া হয়েছে।

পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় নাম উঠেছে ভাঙড় ১ ব্লকের জাগুলগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান কণিকা রায়ের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাগুলগাছির মধ্যপাড়ায় পেল্লায় দোতলা বাড়ি রয়েছে প্রধানের। এ ছাড়া, ঘটকপুকুর বাজারে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের তিনতলা বড় দোকান আছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোন করা হলে প্রধান ফোন ধরিয়ে দেন তাঁর স্বামীকে। প্রধানের স্বামী বিভাস রায় বলেন, “ভুল করে তালিকায় আমার স্ত্রীর নাম চলে এসেছিল। তালিকা পরীক্ষা করে দেখুন, এখন আর তাঁর নাম নেই। যখন নামের তালিকা তৈরি হয়, তখন আমার স্ত্রী প্রধান ছিলেন না। সে সময়ে পাকা বাড়ি ছিল না। পরে পাকা বাড়ি হয়েছে।”

ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদার বলেন, “বিষয়টি নজরে আসতেই তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। নামের তালিকা ধরে ধরে তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে।”

ভাঙড় ১ (এ) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি কাইজার আহমেদ বলেন, “এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে অন্যায় হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রধানের নাম বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

Pradhan Mantri Awas Yojana TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy