দেগঙ্গা থানা। ছবি : সংগৃহীত।
অগোছালো ঘর। অভাবের ছাপ স্পষ্ট। সেই ঘরেই প্রায় ১২ দিন ধরে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করেছিলেন মা-মেয়ে। পুলিশ খবর পেয়ে দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করেছে। অভাবের কারণেই তাঁরা এ ভাবে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন মা-মেয়ে। দু’জনকেই বিশ্বনাথপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাতে দেগঙ্গার কার্তিকপুর এলাকার ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কার্তিকপুরের বাসিন্দা গৌরকৃপা দাস ছিলেন এনভিএফ (ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার ফোর্স) কর্মী। প্রথমে বারাসত এসপি অফিসে এবং শেষের দশ বছর দেগঙ্গা থানায় কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালে অবসর নেন গৌর। দু’বছর পরে মারা যান। রেখে যান স্ত্রী অনিতা ও কন্যা স্বাতীকে। অনিতার বয়স প্রায় বাষট্টি, অবিবাহিতা কন্যা স্বাতীর বয়স বছর পঁয়ত্রিশ।
পাড়া-পড়শির দাবি, দুর্গা পুজোর সপ্তমীর দিন থেকে আচমকা উধাও হয়ে যান মা-মেয়ে। ঘরের দরজা ভিতর থেকে তালা বন্ধ ছিল। ডাকাডাকি করেও সাড়াশব্দ মেলেনি। বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের নজরে আসে। তিনি খবর দেন পুলিশকে। দেগঙ্গা থানার আইসি শ্যামপ্রসাদ সাহার নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে। কয়েক দিন অভুক্ত থাকায় খুবই কাহিল অবস্থা দু’জনের।
অনিতা বলেন, "স্বামী ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। অবসরের দু’বছরের মধ্যেই অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে পড়ি আমরা। অনেক চেষ্টা করেও মেয়ের চাকরি হয়নি। আধার কার্ড না থাকায় রেশন কার্ড মেলেনি। তাই রেশনের চাল, আটাও পাই না। ঘরে চাল, ডাল, গ্যাস কিছুই না থাকায় বেশিরভাগ সময়ে খালিপেটে থাকতে হয়। বাধ্য হয়ে নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিলাম।"
আপাতত দু’জনের চিকিৎসার ভার নিয়েছেন আইসি। পরিবারের আধার কার্ড সহ সমস্ত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য প্রবীর দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy