সকালে হোয়াট্সঅ্যাপ খুললে স্যরের মেসেজ। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও স্যরের মেসেজ। বেশির ভাগই ‘ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা।’ কখনও শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে মেসেজের ভাষা। প্রাপক স্কুলের অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রীরা। প্রেরক স্কুলের প্রিন্সিপাল! একের পর ছাত্রীদের অশ্লীল মেসেজ পাঠানোর অভিযোগে শনিবার যাঁকে স্কুল থেকেই আটক করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের নাম করা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল।
গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যে একাধিক শিক্ষাকেন্দ্রে দুর্নীতি এবং অশালীন ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। শনিবারই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জোকায় আইআইএম ক্যালকাটা-র বয়েজ় হস্টেলে ধর্ষণের অভিযোগে চাপানউতর শুরু হয়েছে। তার মাঝে ক্যানিংয়ের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রিন্সিপালকে আটক করার ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়। অভিযোগ, পড়ুয়াদের সঙ্গে (বিশেষত ছাত্রী) প্রিন্সিপালের ব্যবহার শিক্ষকসুলভ নয়। তিনি স্কুলে মাঝেমাধ্যেই ছাত্রীদের হেনস্থা করেন বলেন অভিযোগ। বাড়িতে থাকলে ছাত্রীদের অশালীন মেসেজ পাঠিয়ে উত্ত্যক্ত করেন। শনিবারই এমনই এক ছাত্রীর পরিবার থানায় যায়। তারা প্রিন্সিপালের পাঠানো মেসেজ পুলিশকে দেখিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এর পর আর কয়েক জন একই অভিযোগে সরব হন। তার পরেই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
এক ছাত্রীর বাবার কথায়, ‘‘অনেক দিন ধরে মেয়েকে খারাপ মেসেজ করতেন উনি (প্রিন্সিপাল)। মেয়ের বোর্ড পরীক্ষা ছিল বলে অপেক্ষা করেছিলাম। আর নয়, এ বার ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। ওঁর কড়া শাস্তি হোক।’’ শুধু ছাত্রীরাই নয়, বেশ কয়েক জন অভিভাবিকাকেও ওই প্রিন্সিপাল অশালীন বার্তা পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ। একের পর এক অভিযোগ ঘিরে শনিবার উত্তেজনা ছড়ায় ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনী এলাকার স্কুলটিতে। অভিভাবকদের কথায়, ‘‘যিনি শিক্ষাদানের দায়িত্বে, তিনিই যদি এমন নোংরামো করেন তবে শিশুদের ভবিষ্যৎ কী হবে?’’
আরও পড়ুন:
শনিবার প্রিন্সিপালকে স্কুল থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস বলেন, ‘‘এই ধরনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ করা হোক, পুলিশের কাছেই এটাই আমার আবেদন।’’