Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ছবি তুলে ধর্ষক বাবাকে পুলিশে দিল মেয়ে

টিভির সিরিয়ালে মেয়েটি দেখেছিল, তারই মতো এক কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করছে তার কাকা। তা দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। সৎমার কাছে বছর পনেরোর মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করে চলেছে তার বাবা।

তেলঙ্গনার ঘটনায় পুলিশের এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের মৃত্যু স্বস্তি দিচ্ছে কাকদ্বীপের মেয়েটির বাবা-মাকে।

তেলঙ্গনার ঘটনায় পুলিশের এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের মৃত্যু স্বস্তি দিচ্ছে কাকদ্বীপের মেয়েটির বাবা-মাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০৪:০৭
Share: Save:

টিভির সিরিয়ালে মেয়েটি দেখেছিল, তারই মতো এক কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করছে তার কাকা। তা দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। সৎমার কাছে বছর পনেরোর মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করে চলেছে তার বাবা।

সৎমা বিশ্বাস করেননি। প্রমাণ চেয়েছিলেন মেয়েটির কাছে। বন্ধুর মোবাইল চেয়ে এনে গোপনে তার উপর বাবার অত্যাচারের দৃশ্য রেকর্ড করে মেয়েটি। গাইঘাটার ঢাকুরিয়া এলাকার ওই কিশোরী সেখানেই থেমে থাকেনি। শুক্রবার থানায় গিয়ে ওসি অনুপম চক্রবর্তীর কাছে সব ঘটনা জানায়। প্রথমে তদন্তকারী অফিসারদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়। পরে গাইঘাটা থানায় এসে তার সৎমা নিজেই মেয়ের কথার সমর্থনে সাক্ষ্য দেন। ওসির কাছে মোবাইলে তোলা ভিডিও-র চিপটি তুলে দিয়েছেন। স্বামীর বিরুদ্ধে তিনি সাক্ষী হতে চান বলেও জানিয়েছেন।

এরপরই ধর্ষণের অভিযোগে বাড়ির থেকেই বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিশুর যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ (পক্সো) আইনের তিনটি ধারায় (নাবালিকা ধর্ষণ, অভিভাবক দ্বারা ধর্ষণ এবং একাধিকবার ধর্ষণ) মেয়েটির বাবার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।’’ মেয়েটির বাবা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েটি স্থানীয় একটি স্কুলের ছাত্রী। সৎমা বাড়িতে না থাকলেই বাবা তাকে ধর্ষণ করত বলে অভিযোগ। ২ অগস্ট ফাঁকা বাড়ির সুযোগে বাবা নির্যাতন করলে মেয়েটি মোবাইল ক্যামেরা চালু রেখে আলনায় ঝোলানো বাবার জামার পকেটে রাখে। জামার বুক পকেটে একটি ছোট ছিদ্রও করে দেয় সে। গোটা দৃশ্যটাই মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড হয়। সেই ভিডিওই মেয়েটি তার সৎমাকে দেখায়।

মেয়েটির কথায়, ‘‘ছ’বছর ধরে আমাকে ভয় দেখিয়ে যৌন নির্যাতন করে আসছে বাবা। কাউকে জানানোর কথা বললে মারধর করত। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিত।’’ কিন্তু ওই ভিডিও দেখার পর সৎমাই তাকে বাবার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহস জুগিয়েছেন। তদন্তকারীদের কাছে মেয়েটির মা বলেন, ‘‘প্রথমে মেয়ের মুখে ওই কথা শুনে প্রতিবাদ করতে সাহস পাইনি। তা ছাড়া সংসারটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় ছিল। কিন্তু ভিডিওতে দেখে আর মেনে নিতে পারিনি।’’ তিনি স্বামীর চরম শাস্তির দাবি করেছেন। মেয়েটি আপাতত গাইঘাটা থানার পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। শনিবার তাকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE