Advertisement
E-Paper

ধর্ষণে অভিযুক্তকেই বিয়ে করলেন তরুণী

মামলা হয়েছিল ধর্ষণের। কিন্তু অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গেই আইনজীবী ও পুলিশ বিয়ে দিল তরুণীর।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪১
পরিণয়: আদালত চত্বরে। বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

পরিণয়: আদালত চত্বরে। বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

মামলা হয়েছিল ধর্ষণের। কিন্তু অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গেই আইনজীবী ও পুলিশ বিয়ে দিল তরুণীর।

শুক্রবার সকালে বনগাঁ মহকুমা আদালত চত্বরে সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বিয়ে হয় ওই তরুণী ও যুবকের। লাল রঙের তাঁতের শাড়ি পরেছিলেন কনে আর পাত্রের পরনে ছিল নীল রঙের টিশার্ট ও জিনস। তাঁদের ঘিরে রয়েছেন আইনজীবীরা। বিয়ের যাবতীয় আয়োজনও করেছিলেন আইনজীবীরা।

কিন্তু এই বিয়েতে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। কেন এমন ভাবে অভিযুক্তের সঙ্গে তরুণীর বিয়ে দেওয়া হল? ওই তরুণী কি চাপে পড়ে বিয়ে করলেন?

পুলিশ ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন, গোপালনগরের বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের ভালোবাসা ছিল হরিণঘাটার রুস্তমপুর এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের। অভিযোগ, তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছে ওই যুবক। সে তিব্বত পুলিশের কনস্টেবল। উত্তরাখণ্ডে কর্মরত।

তরুণীর দাবি, গত বছর তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে যুবকটি। মেয়েটির পরিবারের লোকজন তাকে বুঝিয়েও রাজি করাতে পারেননি। এরপরেই অক্টোবর মাসে তরুণী বনগাঁ আদালতে প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে গোপালনগর থানার পুলিশ ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করে। ২০ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিচারকের নির্দেশে এতদিন জেল হেফাজতে ছিল ওই যুবক। জেলে থাকাকালীন সে ওই তরুণীকে বিয়ে করতে রাজি হয়। এক আইনজীবী বলেন, ‘‘সম্ভবত ওই যুবক বুঝতে পেরেছিল তরুণীকে বিয়ে না করলে তাঁর চাকরি চলে যেতে পারে। সেই কারণেই হয়তো বিয়েতে রাজি হয়েছে ওই যুবক।’’

বনগাঁ মহকুমা আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী সমীর দাস জানান, ওই যুবক ও তরুণীর পরিবারের লোকজন তাঁদের কাছে বলেন তাঁরা দু’জনের বিয়ে দিতে চান। সেই মতো বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়। বিচারক ওই যুবকের অন্তবর্তী জামিন মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার ওই যুবক জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। এ দিন বিয়ের আয়োজন করা হয়।

তবে এ দিন আদালতে এমন বিয়ে দেখে মানুষের ভিড় জমে যায়। কয়েক’শো মানুষ বিয়ে দেখতে জড়ো হন। অনেকে আবার মোবাইলবন্দি করে যুগলের ছবি। এক আইনজীবী মন্ত্রপাঠ করে দু’জনের বিয়ে দেন। বিয়ে শেষে মিষ্টিমুখও চলে।

চোখে জল নিয়ে তরুণী বলেন, ‘‘আজ আমি খুব খুশি। ওর উপর অভিমান হয়েছিল। এখন আর নেই। এখন সুখে শান্তিতে সংসার করতে চাই।’’ পাত্র অবশ্য কথা বলতে চাইছিলেন না। শুধু বলল, ‘‘আমি খুশি।’’

ওই মামলার পরবর্তী তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর। ওই দিন আইনজীবীদের তরফে বিচারককে বিয়ের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। স্ত্রীকে নিয়ে উত্তরাখণ্ডে শুক্রবারই রওনা হচ্ছেন বলে জানিয়েছে ওই যুবক। হাসিমুখে তার সঙ্গে যেতে রাজি ওই তরুণীও।

এখন প্রশ্ন মামালার ভবিষ্যৎ কী হবে?

সমীরবাবু জানান, এখন গোটা বিষয়টি আদালত পর্যবেক্ষণ করছে। তাঁর কথায়, ‘‘১২ সেপ্টেম্বর আমরা বিয়ের কথা জানালে বিচারক ওই যুবককে অস্থায়ী জামিন দিতে পারেন। আগামী ছ’মাসের মধ্যে যদি সে স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে তা হলে মামলা খারিজ হয়ে যাবে। আর যদি নির্যাতন করে বা বিয়ে অস্বীকার করে তাহলে জামিন খারিজ হয়ে যাবে।’’ কিন্তু তারপর?

এর জবাব মেলেনি।

Rape Marriage Bongaon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy