একে ঘেমো গরম, তার মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জেরবার বসিরহাটের পিঁফার বাসিন্দারা। অভিযোগ, ঝড়-বৃষ্টিতে একবার লোডশেডিং হলে দশ-বারো ঘণ্টার আগে পাখা ঘোরার বা আলো জ্বলার নাম নেই। অনেক সময় লো ভোল্টেজে আলো টিমটিম করে। পাখা ঘুরলেও হাওয়া হয় না। প্রতিবাদে শুক্রবার কাঠফাটা রোদে পিঁফায় ন্যাজাট-মালঞ্চ রোডে বসে পড়লেন স্থানীয়েরা। দফায় দফায় অবরোধ বিক্ষোভে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যানজট হল এই রাস্তায়। পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পিঁফার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঝড়-বৃষ্টি না হলেও লোডশেডিং এখানে প্রায়শই হয়। আর ঝড়-বৃষ্টি হলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ থাকে না। বিষয়টি নিয়ে বহুবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অবরোধকারীরা। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ঝড়-বৃষ্টির পরে লোডশেডিং হয়ে যায়। শুক্রবার সকালেও বিদ্যুতহীন হয়ে থাকায় গরমে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন অনেকে। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পিঁফার ট্যাঁটরা বাজারে রাস্তার উপরে টেবিল, চেয়ার পেতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কেবল পিঁফার ট্যাঁটরা বাজার এলাকায় নয়, বসিরহাট পুরসভার কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের ট্যাঁটরা, রামনগর, শ্বেতপুর, আটকড়িয়া-সহ দশ-বারোটি এলাকার মানুষ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঠিকমতো বিদ্যুৎ পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। তাঁরাও শামিল হন বিক্ষোভে।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম, রায়হানুজ্জামান, শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘গরমে লোডশেডিং কেন হবে? শিশু থেকে বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে পড়েন এই গরমে। ঝড়-বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ থাকে না। আমরা চাই বিদ্যুৎ পরিষেবা উন্নত করা হোক। নইলে আমরা আন্দোলন করব।’’ এলাকার অনেকেই জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে যাঁরা ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ার পার্থ দত্ত বলেন, ‘‘সাধারণত ঝোড়ো হাওয়ায় গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুৎবাহী তার ছেঁড়ে। তখন কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অন্য সময়ে রুটিন মেরামতির জন্যও সাময়িক বন্ধ থাকতে পারে। তবে পিঁফায় বৃহস্পতিবার রাতে প্রচুর বড় গাছ ও গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তার ছিঁড়েছে ও আরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুপুরের মধ্যে আমাদের কর্মীরা মেরামত করেছেন। এটা নেহাৎই বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’’
বিদ্যুতের তার ছিঁড়লে তা যেমন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সারানোর কথা, তেমনই ঝড় বর্ষার আগে গাছের ডালপালা ছেঁটে রাখার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পুরসভার দেখা উচিৎ বলে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)