Advertisement
০৯ অক্টোবর ২০২৪
Basirhat

জুতো শুকোচ্ছে দীনেশ মজুমদারের স্মৃতিফলকের উপরে! ব্যবসায়ীর কাণ্ডে শোরগোল বসিরহাটে

বসিরহাটের পুরাতন বাজারের নিমতলায় দীনেশের পৈতৃক বাড়ি। সেই বাড়ির সামনেই তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি ফলক তৈরি করা হয়। অভিযোগ, সেই ফলকের উপরে জুতো শুকোতে দেওয়া হয়েছে।

Dinesh

স্মৃতিফলকের উপরে জুতো! —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৪ ১৯:২৬
Share: Save:

দেশকে স্বাধীন করতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন যাঁরা, দীনেশচন্দ্র মজুমদার তাঁদেরই এক জন। সেই ‘শহিদের’ স্মৃতিফলকের উপর জুতো শুকোতে দেওয়ার অভিযোগ বসিরহাটের পুরাতন বাজার এলাকায় জুতো ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। সমাজমাধ্যমে ওই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। নিন্দায় সরব নেটাগরিকেরা। এমন কাজের নিন্দা করে আইনের দ্বারস্থ হচ্ছে ‘দীনেশ মজুমদার স্মৃতি রক্ষা কমিটি।’

১৯০৭ সালের ১৯ মে বসিরহাটের নিমতলায় পূর্ণচন্দ্র মজুমদারের দ্বিতীয় সন্তান দীনেশের জন্ম। ছোটবেলায় খুব ডাকাবুকো ছিলেন দীনেশ। আপাতদৃষ্টিতে শান্তশিষ্ট, কিন্তু কোণঠাসা হলেই মরিয়া হয়ে উঠতেন তিনি। ১৯২৪ সালে ১৭ বছর বয়সে বসিরহাট হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন। স্কুলের রাস্তাটি বর্তমানে তাঁরই নামাঙ্কিত। বসিরহাট হাই স্কুলের পাট চুকিয়ে দীনেশ চলে যান কলকাতায়, জ্যাঠামশাই হরিমোহন মজুমদারের আশ্রয়ে, তাঁর সাত নম্বর রামমোহন রায় রোডের বাড়িতে। সেখানেই লেখাপড়ার পাশাপাশি চলতে থাকে শরীরচর্চা, বিপ্লবী কাজকর্ম। কলকাতার সিটি কলেজে আইএসসি পড়ার সময়ই লাঠি ও ছুরি খেলার অনুশীলনের জন্য সিমলা ব্যায়াম সমিতিতে ভর্তি হন। ক্রমশ ওই দু’টি খেলায় তিনি এতটাই পারদর্শী হয়ে ওঠেন যে, বহু জনের বিরুদ্ধে একটি লাঠি নিয়ে একাই প্রতিরোধ গড়তে পারতেন।

১৯৩৪ সালের ৯ জুন মারণ রোগ যক্ষ্মায় আক্রান্ত ২৭ বছরের যুবক দীনেশচন্দ্র মজুমদারকে ইংরেজ সরকার প্রায় নিঃশব্দে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিয়েছিল। অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসকের চোখে চোখ রেখে লড়াই করা দীনেশচন্দ্র মজুমদারের জীবনগাথা ইতিহাসের পাতায় আজও উজ্জ্বল।

বসিরহাটের পুরাতন বাজারের নিমতলায় দীনেশের পৈতৃক বাড়ি। সেই বাড়ির সামনেই তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি ফলক তৈরি করা হয়। অভিযোগ, সেই ফলকের উপরে জুতো শুকোতে দেন নিমতলার ইটিন্ডা রোডের ধারের জুতোর এক ব্যবসাদার। ওই ছবি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে শোরগোল।

দীনেশ মজুমদার স্মৃতি রক্ষা কমিটির সম্পাদক অজয় বাইন এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ধিক্কার জানাই ওই ব্যবসায়ীকে। ওই দোকানের পার্শ্ববর্তী যে ব্যবসায়ীরা রয়েছেন, তাঁদের মানসিকতা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, তাঁরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে পারতেন। কিন্তু, তা হয়নি। তিনি জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের তোড়জোড় করছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat North 24 Pargana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE