জমা জলে নাজেহাল পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের সামনে হাঁটু সমান জল। শৌচাগারে যেতে গেলে পড়ুয়াদের পথ আটকাচ্ছে বিষধর সাপ। ক্লাসের মধ্যেও জল। পচা জলের দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না।
রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের দমকল পিরখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই অবস্থার জন্য পড়ুয়ারা কেউ স্কুলে যেতে চাইছে না। এ দিকে দিনের পর দিন পড়াশোনা বন্ধ হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকেরা।
বিডিও মোনালিসা তিরকে বলেন, ‘‘স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। শীঘ্রই কোনও ব্যবস্থাpce নেওয়া হবে।’’
মথুরাপুর পূর্ব চক্রের স্কুল পরিদর্শক মুকুল গাইন বলেন, ‘‘নিকাশির অভাবে ফি বছর বর্ষায় জল দাঁড়িয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। জল কী ভাবে নামবে তা নিয়ে গ্রামের মানুষের কোনও সহযোগিতা পাচ্ছি না।’’
১৯৫৩ সালে ওই স্কুলটি সরকারি অনুমোদন পায়। অতি বৃষ্টিতে স্কুলের সামনে জল জমত ঠিকই। কিন্তু সে সময় স্কুল যাওয়ার রাস্তাটি সরু ছিল। ওই রাস্তা কেটেই জল বের করে দেওয়া হত। ২০১০ সালে রাস্তাটি উঁচু করা হয়। ইটের রাস্তা তৈরি করা হয়। এরপর থেকে আর জমা জল বের করা সম্ভব হচ্ছে না। স্কুল গেট ও মাঠে জল থই থই করছে। কোনওরকম পড়ুয়ারা ওই জল পেরিয়ে স্কুলে ঢুকছে। মিড-ডে মিলের রান্না ঘর, শৌচাগার সবই জলে টইটম্বুর। ফলে ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে মিলও মিলছে না।
স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১০৪ জন। শিক্ষক দু’জন। শিক্ষকেরা জানায়, পচা জল মাড়িয়ে স্কুলে আসতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পায়ে চামড়ার নানারকম রোগ দেখা দিচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া অমিত হালদার, শিখা পুরকাইতরা বলে, ‘‘পা চুলকাচ্ছে। ওষুধ লাগিয়েও কমছে না।’’ অভিবাভক মামনি হালদার, চন্দনা পুরকাইতরা জানান, ছেলে মেয়েদের কোলে করে জল ডিঙিয়ে স্কুলে দিয়ে আসি ঠিকই। কিন্তু চিন্তায় থাকি। জলে পড়ে গিয়ে যে কোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব হালদার বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগেও শৌচাগারে সাপ দেখতে পেয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা। তারপর থেকেই সকলে ভয়ে ভয়ে থাকে। এ ভাবে ক্লাস নেওয়াও যাচ্ছে না। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ বাধ্য হয়ে ২৭ জুলাই থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছেন প্রধান শিক্ষক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy