পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুনের মামলায় তিন আসামির সাজা ঘোষণা করল আদালত। বুধবার সঞ্জীব ওরফে বাপি পণ্ডিত, অমিত পণ্ডিত এবং জিয়ারুল মণ্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালত। পাশাপাশি ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে তাঁদের।
রায়ে খুশি মৃতের পরিবার। তাঁদের পাশে থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনুপমের স্ত্রী তথা তৃণমূল কাউন্সিলর মীনাক্ষী দত্ত। অন্য দিকে, পুলিশি ঘেরাটোপে আদালত থেকে বেরোনোর সময় তিন দণ্ডিতের বক্তব্য, তাঁদের ফাঁসানো হল।
২০২২ সালের ১৩ মার্চ বাড়ির আগরপাড়া স্টেশন রোডে স্কুটারে ওঠার সময়ে গুলিবিদ্ধ হন উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম। খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করেছিল এক দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। সেই রাতেই অমিতকে পাকড়াও করে পুলিশ। পরে একে একে গ্রেফতার হন বাপি এবং জিয়ারুল। যদিও বাপি পরে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। গত সোমবার ব্যারাকপুর আদালত তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করলে সেখান থেকেই আবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করেন অনুপমের স্ত্রী মীনাক্ষী। স্বামীর খুনের পরে পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন তিনি। মীনাক্ষীর কথায়, ‘‘মানুষটা তো আর ফিরে আসবে না। ওর অবর্তমানে আমরা কী ভাবে দিন কাটিয়েছি এবং কাটাচ্ছি আমরাই জানি। আমার শাশুড়ি (অনুপমের মা) ছেলের মৃত্যুর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিন বছর তিনি কোমায় ছিলেন। আজ দোষীদের শাস্তি হল। মহামান্য আদালতকে সম্মান জানাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। কিন্তু দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। আমরা কেউ তো আর আইনের ঊর্ধ্বে নই... তবে কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলা গড়ালে সেখানেও লড়ব। শাস্তি চাইব।’’
আরও পড়ুন:
মীনাক্ষীদের দাবি, শুধু বাপিরাই নন, অনুপম খুনের মূলচক্রী আরও কেউ রয়েছেন। অনুপমের পরিবার বলছে, একজন কলের মিস্ত্রি কী কারণে একজন জনপ্রতিনিধিকে খুন করতে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দোষীরা বারবার বলেছেন, তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু কারা ফাঁসিয়েছেন, কাদের কাছ থেকে খুনের বরাত পান, বলেননি। তা ছাড়া এত দিন ধরে তাঁরা মামলা লড়ার অর্থ কোথা থেকে পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মীনাক্ষীরা। মৃত কাউন্সিলরের সহোদর বলেন, ‘‘আমরা এখনও জানতে পারলাম না দাদাকে খুনের সুপারি দিয়েছিল কে? খুনিরা কোথা থেকে টাকা পেয়েছিল। এরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’